সব মুসলমানকে বের করে দেবে মিয়ানমার

চলতি বছরের মাঝামাঝি রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, সমতা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে আন্তর্জাতিক সম্মাননা ‘অরোরা পুরস্কার’ লাভ করা মিয়ানমারের আইনজীবী কিয়াও হ্লা অং জানিয়েছেন, মিয়ানমার সরকার সব রোহিঙ্গা মুসলমানকে সে দেশ থেকে বের করে দিতে চায়। আলজাজিরা অনলাইনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন কিয়াও। বৃহস্পতিবার প্রখ্যাত এই আইনজীবীর সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে।

আলজাজিরার পক্ষ থেকে কিয়াওয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কেন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করছে মিয়ানমার এবং তাদের নাগরিকত্ব নির্ণয়ের মাপকাঠিটা কী। কিয়াও জবাবে বলেন, ‘১৯৪৮ সালের নাগরিক আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি ১০ বছর মিয়ানমারে বাস করলে এবং এর মধ্যে টানা আট বছর সেখানে থাকলে তিনি নাগরিকত্বের যোগ্য হবেন। তারা ১৯৮২ সাল থেকে আমাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে আসছে। যার জমি আছে তাকে নাগরিক হিসেবে গ্রহণ করা উচিত; কিন্তু সেটা হচ্ছে না। ১৯৬৪ সালে মিয়ানমারের শাসক জেনারেল নে উইন সব দোকান, খামার ও প্রতিষ্ঠান ভারতীয়, পাকিস্তানি ও চীনাদের কাছ থেকে নিয়ে জাতীয়করণ করেন। তিনি সব বিদেশীকে মিয়ানমার থেকে বের করে দেন। তবে ওই সময় তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বের করে দেয়নি।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা এই ভূমির মালিক, এর আগের গণতান্ত্রিক সরকারগুলো তাদেরকে স্বীকৃতি দিয়ে গেছে, যাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ইউ নুও রয়েছেন। তবে সামরিক অভ্যুত্থানের (১৯৮২ সালে) পর তারা বলছে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়। আমার বাবার জমি ছিল এবং আমার কাছে দলিল আছে; কিন্তু তারা (সরকার) একে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। ১৯৫৯ সালে সরকার মুসলিমসহ সবাইকে জাতীয় নিবন্ধন কার্ড দিয়েছিল।’

মিয়ানমার সরকার মুসলমানদের বের করে দিতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব রোহিঙ্গাকে উচ্ছেদের পর তারা বার্মার সব মুসলমানকে বের করে দেবে। এই দেশ থেকে সব মুসলমানকে বের করে দেয়ার পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা প্রসঙ্গে কিয়াও বলেন, ‘প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আমি মিয়ানমার কর্মকর্তাদের বিশ্বাস করি না। কারণ যেসব লোক রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর ও গবাদিপশু লুট করেছিল তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা তারা নেয়নি। তাহলে এসব লোক কী করে ফেরত যাবে? এ ছাড়া প্রত্যাবাসনকৃত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আইন বা সরকার কিছুই বলেনি।’

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top