পুলিশ হেফাজতে গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনিকে নির্যাতন করে মেরে আসামিরা শুধু আইনের বরখেলাপই নয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন।
বুধবার (০৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে একথা বলেন বিচারক।
তিনি বলেন, ‘অনেক চড়াই-উতড়াই পেরিয়ে মামলাটি আমার হাতে নিষ্পত্তি হচ্ছে। পুলিশ হেফাজতে কাউকে নির্যাতন করলে আল্লাহ আর কয়েদি ছাড়া অন্য কেউ দেখতে পায় না। কিন্তু এ মামলার আরেক ভিকটিম নিহত জনির ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি সৌভাগ্যক্রম বা দুর্ভাগ্যক্রম হোক সেটি দেখতে পেয়েছেন। আসামিরা একটা জঘন্য অবস্থার সৃষ্টি করেছিল। এসআই জাহিদ ও অপর দুই এএসআই রাশেদুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান মিন্টু সরাসরি নির্যাতনে অংশগ্রহণ করে। ভিকটিম জনি পানি চাইলে তাকে পানি দেওয়া হয়নি। জাহিদ তার মুখে থুথু মারেন। আসামিরা শুধু আইনের বরখেলাপই নয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘আপনারা লিখবেন এ মামলায় পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন হলে ৫ বছরের কারাদণ্ড, আর কেউ যদি নির্যাতনে মারা যান তাহলে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এটা না লিখলে নেগেটিভ বার্তা যাওয়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে।’
এদিকে রায়ে উপ-পরিদর্শকের (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল ইসলাম ও কামুরজ্জামান মিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড ছাড়াও এই তিনজনকে নিহতের পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের এই টাকা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে কোনো আপিল চলবে না।
মামলার অবশিষ্ট ২ আসামির ৭ বছর করে কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।