বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর সেখানে সংক্রমণের হার বেড়েছে। সে অভিজ্ঞতায় সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে অনুকূল পরিবেশের জন্য অপেক্ষা করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে হলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু: বাঙালির চেতনার বাতিঘর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। আমেরিকা বেশ কয়েকটি রাজ্যে খুলে দিয়েছে। এতে সেখানে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অভিজ্ঞতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা, দীপু মনি।
‘সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে হলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের নাগরিক ভবিষ্যতের নেতা, তাই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কিছুদিন ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।’
অনেকে দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়েছে উল্লেখ করে জনগণকে আরও বেশি সতর্কভাবে চলতে হবে এবং সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধুকে যারা মুছে ফেলতে চেয়েছে, তারাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্তি হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের খুনিরা ছাড় পাবে না। পালিয়ে থাকা খুনিদের ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে নিজেকে প্রস্তুত করার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আবেগহীন রোবট নয়, চাই দেশপ্রেমিক নিউজেনারেশন। আমরা পরীক্ষার্থী নয়, শিক্ষার্থী চাই। আমরা জীবিকা না জীবনের জন্য শিক্ষা চাই। এই বাস্তবতা শিক্ষার্থীদের উপলব্ধি করতে হবে।
‘প্রতি শিক্ষাবর্ষে কতজন মানবিক মানুষ আমরা পাচ্ছি? শিক্ষা ব্যবস্থার এই বিষয়ে আমাদের নজর দেওয়া দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি থাকবে সেটা স্বাভাবিক কিন্তু ছাত্র রাজনীতি আর শিক্ষক রাজনীতিক আকার প্রকার আর ধরনে ভিন্নতা রয়েছে। ’
তিনি বলেন, আমরা বিভেদের দেয়াল চাই না। বিভেদের রাজনীতি আমাদের পিছিয়ে দেবে। সম্প্রীতি এগিয়ে নেবে অর্জনের সোনালী দিগন্তে।
ওবায়দুল কাদের বলেন. অপরাধীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। ব্যবস্থা নিয়েছে শাহজাদপুরের সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডেও। শেখ হাসিনা কাউকে অপরাধীর জন্য পার পেতে দেননি। অনেক এমপির দুদকের মামলায় সাজাও হয়েছে।
‘আমি মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই, নিজের দলের লোককে সাজা দিয়েছেন এমন প্রমাণ কী আপনাদের শাসনামলে দেখাতে পারবেন। দিনাজপুরের ইউএনওর হামলার ঘটনায় ককেজনকে আটক করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। দেশ ও জনগণের প্রতি কমিটমেন্ট আছে বলেই সরকার যেকোনো ধরনের ঘটনায় সবার আগে রেসপন্স করে। কারো হাতে আমরা ইস্যু তুলে দিতে চাই না। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হয়। ’
ময়মনসিংহ প্রান্তে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য মাওলানা রুহুল আমীন মাদানি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর হারুন অর রশিদ প্রমুখ।