ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েও বার্সেলোনাতেই থেকে গেলেন লিওনেল মেসি। কাতালান ক্লাব ছাড়ার জন্য দশ দিনের লড়াইয়ের ইতি টানলেন আরও এক মৌসুম ‘ভালোবাসার ক্লাবে’ থেকে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে। বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় বললেন, সভাপতি হোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ কথা রাখেননি বলে মতের বিরুদ্ধে ন্যু ক্যাম্পে থাকতে হলো তাকে।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বার্সার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার যে চেষ্টা করছিলেন মেসি, তা নিয়ে ফুটবল ওয়েবসাইট গোল ডট কমের সঙ্গে কথা বললেন। সেখানেই জানালেন ক্লাব সভাপতির সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের টানাপড়েনের কথা।
মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার ঘোষণার পেছনে অনেকে দলের ব্যর্থতার কথা বলছেন। কিন্তু ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী জানালেন এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্লাবটি ছাড়ার কথা প্রেসিডেন্ট বার্তোমেউকে বলে আসছেন তিনি। কিন্তু কোনও সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত জোর করতে বাধ্য হয়েছেন।
গোলকে মেসি বলেছেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টসহ ক্লাবকে বলেছিলাম, আমি চলে যেতে চাই। সারা বছর ধরে আমি তা বলে আসছি। আমি বিশ্বাস করছিলাম, সরে যাওয়ার এখনই সময়। আমি বিশ্বাস করছিলাম যে ক্লাবে আরও তরুণ ও নতুন খেলোয়াড় দরকার। আমার মনে হয়েছিল, বার্সেলোনায় আমার সময় শেষ। আমার কষ্ট লাগছিল, কারণ আমি সবসময় বলেছি এখানেই আমার ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই।’
বার্সেলোনাকে বিদায়ের চিন্তাভাবনা আরও আগেই মেসির মাথায় এসেছিল। তিনি বলেছেন, ‘বায়ার্নের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফলাফলের কারণে এই চিন্তা এসেছে, তা নয়। অনেক দিন ধরে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ভেবেছি। হ্যাঁ, বছরটা কঠিন ছিল। ট্রেনিং, খেলা ও ড্রেসিংরুমে আমি ভুগছিলাম। আমার জন্য সবকিছু কষ্টকর হয়ে যাচ্ছিল। নতুন কোনও লক্ষ্যর জন্য ভাবছিলাম।’
তাই প্রেসিডেন্টকে নিজের মনের কথা বলেছিলেন ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়, ‘আমি প্রেসিডেন্টকে বলেছিলাম। তিনি বলে এসেছেন, মৌসুম শেষে আমি থাকবো না চলে যাব সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো তিনি কথা রাখলেন না।’
মেসি আরও বলেছেন, ‘সারা বছর ধরে আমি প্রেসিডেন্টকে বলে এসেছি আমি চলে যাবো। আমার ক্যারিয়াারের নতুন লক্ষ্য ও দিক ঠিক করার সময় এসে গেছে। তিনি আমাকে সবসময় বলতেন ‘আমরা কথা বলবো, এখন নয়, আরও এটা সেটা।’ কিন্তু কিছুই নয়। আসলে কী বলতে চাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট তা স্পষ্ট করে বলেননি।’
ব্যুরোফ্যাক্স পাঠানোর ব্যাপারে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘আমি যে চলে যেতে চাই তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে ব্যুরো ফ্যাক্স পাঠাতে হয়েছে, কারণ আমি তো ফ্রি। আমি কোনও বিশৃঙ্খলা করতে চাইনি কিংবা ক্লাবের বিরুদ্ধেও যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না।’
মেসি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘তারা বলছে আমি ১০ জুনের আগে এটা বলিনি। কিন্তু আমি বলেছি, আমরা তো ওই সময় প্রতিযোগিতার মাঝামাঝি ছিলাম এবং তখন এসব বলার মতো মুহূর্ত ছিল না। কিন্তু এটা (১০ জুনের মধ্যে সরে যাওয়া) যদি বাদও দেই তারপরও বলবো প্রেসিডেন্ট আমাকে সবসময় বলেছেন, ‘যখন মৌসুম শেষ হবে তুমি সিদ্ধান্ত নেবে থাকবে না চলে যাবে।’ তিনি কখনও তারিখ ঠিক করেননি। আমি শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে এটুকু বলতে চেয়েছিলাম যে আমি থাকবা না। কিন্তু আমি লড়াই শুরু করতে চাইনি কারণ ক্লাবের বিরুদ্ধে আমি লড়াই করতে চাইনি।’