সিলেট-১ আসনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার ততই বুঝতে পারছে তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা জনবিচ্ছিন্ন-জনসমর্থনহীন। তারা বুঝতে পেরেছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর এই সরকারের কবল থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করার প্রত্যাশায় ভোট কেন্দ্রগুলোতে জনতার ঢেউ নামবে। নিশ্চিত পরাজয় জেনে আওয়ামী লীগ এখন পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে। শুরু করেছে গণগ্রেফতার। শুধু গ্রেফতার নয়, ধানের শীষের প্রচারণায়ও বাধা দেয়া হচ্ছে। তাদের বাধার কারণে গতকাল সোমবার সিলেটে কোনোরূপ প্রচারণা করতে পারিনি। ‘আমাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে’ উল্লেখ করে খন্দকার মুক্তাদির বলেন, গত রোববার রাতে ৩ দফায় তিনটি সভাস্থল থেকে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেছে সাদা পোশাকের পুলিশ। কৌশলে তিনি গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হন।
গতকাল বিকেলে আম্বরখানার তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির এসব অভিযোগ করে জানান, গত দুই দিনে বিএনপি ও ২৩ দলের শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেন- সিলেট মহানগর বিএনপির সহসভাপতি মুফতি বদরুন নুর সায়েক, হাটখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা আজির উদ্দিন, মহানগর বিএনপির প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, জেলা বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ওলিউর রহমান ডেনি, মহানগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, ১৬ নম্বর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুম্মান আহমদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি বেলাল আহমদ, যুবদল নেতা গাজী লিটন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা মীর্জা জাহেদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ ঘোষ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহজাহান আহমদ, কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চমক আলীর পুত্র সোহেল আহমদ, ছাত্রদল নেতা জাহেদ আহমদ, সোহেব খান, তানজিল আহমদ, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড জাসাসের সাধারণ সম্পাদক রুমান খান, বিএনপি কর্মী হাবিবুর রহমান ডালিম, খোরশেদ আলম প্রমুখ। তিনি জানান, তাদেরকে গ্রেফতার করা ছাড়াও প্রতিটি সেন্টার কমিটির সভার পর পরই পুলিশ ওই এলাকায় হানা দিয়ে কমিটির নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং তাদেরকে না পেয়ে ৩০ তারিখে এলাকায় না থাকার জন্য পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছে।
ইতোমধ্যে জেলা বিএনপির সহসভাপতি এ কে এম তারেক কালাম, খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন, টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদ আহমদের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশির নামে ভাঙচুর চালিয়েছে পুলিশ। গত দুই দিনে শাহপরাণ, জালালাবাদ, এয়ারপোর্ট ও দক্ষিণ সুরমা থানায় আরো ৪টি গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এয়ারপোর্ট থানায় বিএনপির ৫৭ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। শাহপরাণ থানার গায়েবি মামলায় খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাজাহারুল ইসলাম ডালিমসহ শতাধিক নেতকার্মীকে আসামি করা হয়েছে। এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সাদা পোশাকে সোমবার দুপুরে সদর উপজেলা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করতে গেলে জনতার প্রতিরোধের মুখে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, জনতার প্রতিরোধের মুখে স্বৈরাচার কোনো দিনই টিকে থাকতে পারেনি। এবারো পারবে না। যত বাধাই আসুক ৩০ ডিসেম্বর আমরা মাঠে থাকব। দলে দলে জনতা ধানের শীষে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসবে। জনতার এই বাঁধভাঙা জোয়ারকে প্রতিরোধের শক্তি এই সরকারের নেই। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল বক্ত সাদেক, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বদর, মহানগর বিএনপি নেতা ডা: আশরাফ আলী, মাজহারুল ইসলাম ডালিম, অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ, আ ফ ম কামাল, অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক প্রমুখ।