দায়িত্ব নিয়েছেন এক সপ্তাহও হয়নি। গত বুধবার বার্সেলোনার নতুন কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে নেদারল্যান্ডসের সাবেক ডিফেন্ডার রোনাল্ড কোম্যানকে। আর দায়িত্ব নেয়ার ষষ্ঠ দিনের মাথায় কি না দলের সবচেয়ে বড় তারকা ও অধিনায়ক লিওনেল মেসির ক্লাব ছাড়ার কারণ হয়ে গেলেন নতুন এই কোচ!
মঙ্গলবার এক ফ্যাক্সবার্তার মাধ্যমে ক্লাব ছাড়ার কথা বার্সেলোনা টিম ডিরেক্টরদের জানিয়ে দিয়েছেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসি। স্প্যানিশ ক্লাবটির পক্ষ থেকেই নিশ্চিত করা হয়েছে এ তথ্য। যত দ্রুত সম্ভব ক্লাব ছাড়ার কথা ভাবছেন মেসি।
নিজের ক্যারিয়ারের কঠিনতম এ সিদ্ধান্ত জানানোর আগে নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যানের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন মেসি। সেখানে এমন একটি কথা বলেছিলেন কোম্যান, যা একদমই পছন্দ হয়নি বার্সেলোনার অধিনায়কের। আর এ কারণেই ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন মেসি।
কী বলেছিলেন কোম্যান? স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম দেপোর্তেস কুয়াত্রোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেসিকে আগের মতো সুযোগ সুবিধা না দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কোম্যান। তার কথায় মনে হচ্ছিল, দলের কথা না ভেবে শুধু নিজের কথা ভেবেই বার্সেলোনায় খেলেন মেসি। এমন মন্তব্য মেনে নিতে পারেননি ক্লাবটির ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়।
দেপোর্তেস কুয়াত্রোর খবরে জানানো হয়েছে, মেসিকে কোম্যান বলেছেন, ‘আগে বার্সেলোনা স্কোয়াডে তুমি যেসব বিশেষ সুবিধা পেতে, এখন আর সেসব হবে না। তোমাকে এখন দলের জন্য সবকিছু করতে হবে। আমি এ ব্যাপারে অনমনীয় থাকব। তোমাকে সবসময় ক্লাব নিয়েই চিন্তা করতে হবে।’
কিন্তু মেসির মতো দল অন্তঃপ্রাণ একজন খেলোয়াড়ের জন্য এমন মন্তব্য ছিল খুবই অপমানজনক। তাই কোম্যানের সঙ্গে আলোচনা শেষে দল ছাড়ার কথাই জানিয়ে দিয়েছেন মেসি। তবে কোম্যানের এ মন্তব্যই শুধুমাত্র তার ক্লাব ছাড়ার একমাত্র কারণ নয়। লম্বা সময় ধরেই বার্সেলোনার সঙ্গে নানান বিষয়ে বনিবনা হচ্ছিল না মেসির।
এদিকে মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার খবর মানতে পারেননি ক্লাবটির ভক্ত-সমর্থকরা। মঙ্গলবার মেসির সংবাদ সম্মেলনের পরপরই ক্লাবের স্টেডিয়াম ন্যু ক্যাম্পের বাইরে এসে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। তখন তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড ও মাফলারে লেখা ছিল, ‘মেসি থাকো, বার্তেম্যু পদত্যাগ করো।’
উল্লেখ্য, বার্সেলোনার বর্তমান ক্লাব প্রেসিডেন্ট জোসেফ মারিয়া বার্তেম্যু। মেসির ক্লাব ছাড়ার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ বার্তেম্যু ও তার ক্লাব পরিচালকদের স্বেচ্ছাচারিতা ও অত্যধিক ব্যবসায়িক মনোভাব। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বার্তেম্যু পদত্যাগ না করার কারণেও মেসি ক্লাব ছাড়ার জন্য এমন তাড়াহুড়ো দেখাচ্ছেন।