আইনি জটিলতায় শূন্য হয়ে যাওয়া আসনগুলোতে বিকল্প প্রার্থী দিচ্ছে বিএনপি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আবু আশফাক। উপজেলা চেয়ারম্যান নিয়ে আইনি জটিলতায় সর্বোচ্চ আদালতে তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়ে গেছে। সেখানে বিএনপি, ২০ দল বা ঐক্যফ্রন্টের এখন কোনো প্রার্থী নেই। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। বিএনপি জোট তাকেই সমর্থন দিয়েছে। সিলেট-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি জটিলতায় সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েও তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়। সেখানে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকে মো: মুকাব্বির খানকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি।
মানিকগঞ্জ-৩ আসনে ঋণখেলাপির কারণে আফরোজা খান রীতার মনোনয়ন স্থগিত হয়েছে। সেখানে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকে সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম খান কামালকে সমর্থন দিতে পারে বিএনপি। জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী করা হয় ফজলুর রহমানকে। উপজেলা চেয়ারম্যান নিয়ে আইনি জটিলতায় গতকাল সর্বোচ্চ আদালতে তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়। সেখানে বিএনপির ফয়সাল আলিম নামে আরেক প্রার্থী বৈধ আছেন। এখন ধানের শীষের প্রতীক তাকে দেয়ার জন্য তোড়জোড় চলছে। নাটোর-১ আসনে আইনি জটিলতায় কৃষক প্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী মনজুরুল ইসলামের প্রার্থিতা বাতিল হয়। সেখানে বিএনপির শিরিন আক্তার ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন।
রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন আবু সাইদ চাঁদ। উপজেলা চেয়ারম্যান জটিলতায় গতকাল সর্বোচ্চ আদালতে তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় ওই আসনে বিএনপি প্রার্থী শূন্য হয়ে পড়ে। ওই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দল বা স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীও নেই। তাই ওই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন বা ইসলামী আন্দোলনের ‘হাতপাখা’ প্রতীকের প্রাথী বাবুল ইসলামকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি।
ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপি মনোনিত ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন আবদুল মজিদ। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তার প্রার্থিতা বাতিল হয়। ওই আসনে বিএনপি, ২০ দল বা ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থী নেই। সেখানে বাসদের আসাদুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা ফখরুল ইসলাম ও জাকের পার্টির আবু তালেব সেলিম প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। এর মধ্যে বাসদের প্রার্থী আসাদুল ইসলামকে বিএনপি জোট সমর্থন দিতে পারে।
বগুড়া-৩ আসনে ধানের শীষের আবদুল মহিত তালুকদারের জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন (আপেল) এবং আবদুল মজিদের (ডাব) মধ্যে কোনো একজনকে সমর্থন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ঢাকা-২০ আসনে ধানের শীষের তমিজউদ্দিনের জায়গায় বিকল্প কোনো প্রার্থী নেই। এই আসনটিতে আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডির এম এ মান্নান তারা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তাকেই সমর্থন দেবে ঐক্যফ্রন্ট। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয় ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিনকে। কিন্তু তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় ওই আসনে বিএনপির বৈধ প্রার্থী নাছির উদ্দিন হাজারী লড়ছেন। এ নিয়ে তিনি আদালতে রিট করে ধানের শীষ প্রতীক চাইবেন বলে জানিয়েছেন।
রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন নাদিম মোস্তফা। আইনি জটিলতায় তার প্রার্থিতা বাতিল হয়। সেখানে বিএনপি থেকে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডলকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হয়েছে। নওগাঁ-১ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী দেয়া হয় সালেক চৌধুরীকে। আইনি জটিলতায় গতকাল তিনি সর্বোচ্চ আদালতে হেরে যান। সেখানে বিএনপির আরেক প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের হাতেই শেষ পর্যন্ত ধানের শীষ প্রতীক থাকছে। আইনি জটিলতায় মানিকগঞ্জ-১ আসনে এস এ কবীর জিন্নাহর পরিবর্তে খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলু ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন।
চাঁদপুর-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিল এম এ হান্নান। কিন্তু উচ্চ আদালতে তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়ে যায়। সেখানে বিএনপিসহ তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন নসুও বৈধপ্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। তাকে নিয়ে বিএনপি এখন প্রন্তাভাবনা করছে।
বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মোর্শেদ মিল্টন। সেখানে বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থী নেই। ওই আসনে বৈধ প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এনপিপির ফজলুল হক ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মোনতেজার রহমান। বিএনপি এই দুইজন থেকে একজনকে বেছে নিতে পারে।
জামালপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন রশিদুজ্জামান মিল্লাত। তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাওয়ায় ওই আসনে উদীয়মান সূর্য প্রতীকে গণফোরামের ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল হককে বিএনপি সমর্থন দেয়ার চিন্তা করছে। দিনাজপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে মোফাজ্জল হোসেন দুলাল নামে বিএনপির আরেকজন বৈধ প্রার্থী রয়েছেন। এ নিয়ে দুলাল রিটও করেছেন। উচ্চ আদালতে আগামীকাল এ নিয়ে শুনানি রয়েছে। এরপরই বিএনপি সিদ্ধান্ত নেবে।