জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন: সুজন

১৯৭১ সালে অস্ত্র হাতে যারা লড়াই করেছেন তারাই একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা নন। রাজনৈতিক চেতনা ও ধারাবাহিকতা ছাড়া শুধু অস্ত্র হাতে নিলেই মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যায় না।

তাই জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করলেও তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন।
রোববার (২৩ আগস্ট) নগরের একটি কনভেনশন সেন্টারে নগর মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন এসব কথা বলেন।

সুজন বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হয়ে অসম ভৌগলিক অবস্থান নিয়ে পাকিস্তান নামক একটি অবৈজ্ঞানিক অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যে জিন্নাহ যখন ঘোষণা করেছিল- উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা, সেদিন বঙ্গবন্ধু ‘না না’ বলে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলা। তাই আমাদের উপর উর্দু চাপিয়ে দেয়া যাবে না।

তিনি বলেন, তারপর থেকেই ৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি, ৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা এবং পরবর্তীতে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণই হল বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের একটি ধারাবাহিক পরম্পরা।

‘যারা ৭১ এ শুধুমাত্র অস্ত্র হাতে লড়াই করেছেন তারাই একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা নন। ৪৮ থেকে ৭০ পর্যন্ত ধাপে ধাপে অনেক মুক্তিযোদ্ধা তৈরি হয়েছেন। রাজনৈতিক চেতনা ও ধারাবাহিকতা ছাড়া শুধু অস্ত্র হাতে নিলেই মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যায় না। তাই জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করলেও তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন। ’

সুজন বলেন, জিয়া ছিলেন ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রধান কূশীলব। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে এদেশে পাকিস্তানি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, যারা এ দেশেকে পাকিস্তান বানাতে ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটিয়েছে তারা সফল হয়নি, ব্যর্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলেও তার আদর্শ আরও প্রবল হয়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। তাই জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষা বিস্তারের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাই তিনি আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে প্রথম মহিলা আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন।

‘মহিলা আওয়ামী লীগ দেশে মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক অংশ হিসেবে জাতীয় উৎপাদন, সমৃদ্ধি, কল্যাণ ও প্রগতির সমান অংশীদার। তাই চট্টগ্রাম নগর মহিলা আওয়ামী লীগ ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে নারী সমাজকে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করার পাশাপাশি শালীনতার মধ্য দিয়ে জাতীয় সমৃদ্ধির ও সমাজ প্রগতির অংশীদার হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। ’

তিনি বলেন, যারা পদ-পদবী নিয়ে নিস্ক্রীয় আছেন, তাদের বুঝতে হবে দল না করলে তার কোনো মর্যাদা থাকে না। করোনাকালে আমি আক্রান্ত হওয়ার পরও আমার কর্মীদের উজ্জীবিত রেখেছি এবং ঘরে ঘরে গিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মহিলা সমাজকে মাঠে রেখেছি।

চট্টগ্রাম নগর মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নীলু নাগের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মালেকা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক রহমতুন্নেছা, অর্থ সম্পাদক আফরোজা কালাম, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হাসিনা আক্তার টুনু, হুরে আরা বিউটি, শারমিন ফারুক, রোকসানা আক্তার, আয়েশা আলম প্রমুখ।

Share this post

scroll to top