সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘আল বিদা’ স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। মৃত শিক্ষার্থীর নাম ইমাম হোসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আজ সোমবার সকালে বরিশালের উজিরপুর থানার গাজিরপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার সকালে তিনি নিজ বাড়িতে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। বেশ কিছুদিন ধরে ইমাম হোসেন মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন জানিয়েছেন বলে তার বন্ধুরা। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ইমাম রাজধানীর নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।
ইমামের একাধিক ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। তাদের ধারণা প্রেমঘটিত কারণ থেকে ইমাম আত্মহত্যা করতে পারে।
জানা গেছে, একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ইমামের। কিছুদিন আগে সম্পর্কটি ভেঙে যায়। এ নিয়ে ইমাম অনেক দিন ধরেই হতাশায় ভুগছিলেন। পরে গতকাল (রোববার) রাতে নিজের বাড়িতেই এলাকার তিনজন বন্ধুর সঙ্গে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দেন ইমাম। সকাল সাড়ে আটটার দিকে ওই তিন বন্ধু বাসা থেকে চলে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এলাকায় কিছুদিন ধরে স্থানীয় কয়েকজন স্কুলছাত্রকে পড়াচ্ছিলেন ইমাম। সোমবার সকাল নয়টার সময় ওই ছাত্ররা ইমামের বাসায় পড়তে যায়। কিছু সময় পর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তার পরিবারের সদস্যরা ইমামকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন।
জানা গেছে, ইমাম হোসেনের সাথে রাজধানীর ইডেন কলেজের এক ছাত্রীর প্রেমের সর্ম্পক ছিল। তবে বিষয়টি ওই মেয়ের পরিবার মেনে না নেওয়াতে মেয়েটি ইমামের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর ইমাম মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
ঢাবির ওই ছাত্রের ফেসবুকের কাভার ফটো ছিল ‘তোমাকে পাবো পাবো বলেই আত্মহত্যার তারিখটা পিছিয়ে দেই।’ আর প্রোফাইলে ছিল- ‘সিলিংয়ে ঝুলে গেলো সত্তা, নাম দিলে তার আত্মহত্যা।’
কিছুদিন ধরেই ফেসবুকে আত্মহত্যা বিষয়ক বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছিলেন ইমাম হোসেন। বন্ধুরা তাকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টাও করেছেন। রোববার ইমাম ফেসবুকে ‘আল-বিদা’ লিখে একটি স্ট্যাটাস দেন। যা নিয়ে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। ওই পোস্টে শুধু ‘আল-বিদা’ শব্দটি লিখেছিলেন ওই ছাত্র। যদিও ওই পোস্ট দেয়ার একদিন পর আত্মহত্যা করলেন তিনি। এর আগে দেয়া এক পোস্টে ইমাম লিখেছিলেন, ‘বিশ্ব-সংসার তন্ন-তন্ন করে খুঁজে এনেছি একশো আটটি নীলপদ্ম। তবুও কেউ কথা রাখেনি।’