নতুনদের সুযোগ করে দিতে বার্সা ছাড়তে রাজি পিকে

বায়ার্ন মিউনিখের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায়ের পর থেকেই ক্যাম্প ন্যুয়ে রীতিমতো ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে দাবি উঠেছে কোচ কিকে সেতিয়েন থেকে শুরু করে খোদ বার্সা প্রেসিডেন্ট হোসে মারিয়া বার্তমেউকে সরিয়ে দেওয়ার।

দাবি উঠেছে দলের ‘বুড়ো’দের বিদায় করে দেওয়ারও। সমর্থকদের এমন দাবির সঙ্গে একমত জেরার্ড পিকেও। এই সেন্টার-ব্যাক এমনকি প্রয়োজনে ক্লাব ছাড়তেও রাজি।

চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের একমাত্র লেগে জার্মান চ্যাম্পিয়নদের কাছে ২-৮ গোলের বিশাল ব্যবধানে হেরে ফিরেছে বার্সেলোনা। বায়ার্নের টমাস মুলার এবং ফিলিপ্পে কৌতিনহো দুজনেই জোড়া গোল করেছেন। এর মধ্যে এই ব্রাজিলিয়ান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ধারে খেলতে গিয়ে ‘অবিভাবক’ ক্লাবের বুকেই জোড়া তীর ছুড়ে মেরেছেন। বাকি গোল এসেছে ইভান পেরিসিচ, সার্জি জিন্যাব্রি, জশুয়া কিমিচ এবং রবার্ট লেভান্ডভস্কির পা থেকে।

অপরদিকে বার্সার হয়ে বায়ার্নের রক্ষণ ভাঙতে সক্ষম হয়েছেন একমাত্র লুইস সুয়ারেস। বাকি গোল অদ্ভুত এক ভুল করে (বার্সার জর্দি আলবার ক্রস নিজেদের গোলরক্ষকের দিকে ঠেলে দিতে গিয়ে জালে জড়িয়ে দেন আলাবা) বার্সাকে উপহার দিয়েছেন বায়ার্নের ডিফেন্ডার ডেভিড আলাবা। বাকি সময়টা ছিল বায়ার্নের একচ্ছত্র আধিপত্য। তাদের সামনে বার্সার রক্ষণ ছিল রীতিমতো অসহায়। দেখে মনে হচ্ছিল ম্যাচের হাইলাইটস চলছে।

এমন বিপর্যয় বার্সা সমর্থকদের মোটেও হজম হচ্ছে না। হজম হচ্ছে না বার্সা তারকাদেরও। ম্যাচ শেষে তাই নিজেদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন পিকে। লিসবনের এস্তাদিয়ো দা লুজে ম্যাচ শেষে ‘মোভিস্টার’কে বার্সা সেন্টার-ব্যাক বলেন, ‘একমাত্র লজ্জা শব্দটা দিয়েই এই হারকে প্রকাশ করা যায়। এটা ভয়ানক ম্যাচ ছিল। এভাবে খেলা যায় না, আপনি ইউরোপীয় পর্যায়ে এভাবে খেলতে পারেন না। এমনটা যে এবারই প্রথম ঘটেছে তা নয়। ’

পিকে বলেন, ‘ক্লাবের এখন জরুরি ভিত্তিতে পরিবর্তন দরকার। আমি কোচ কিংবা খেলোয়াড় পাল্টানোর কথা বলছি না। আমি কারো দিকে আঙুল তুলছি না। আমাদের সবদিক থেকেই গুণগত পরিবর্তন দরকার। এজন্য সবার আগে আমি নিজে এগিয়ে আসতে চাই। কেউ ক্লাবের জন্য অপরিহার্য নয়। যদি দলে নতুনদের প্রয়োজন হয় আমি সবার আগে চলে যাব কিংবা সরে দাঁড়াবো। ’

তবে পরিবর্তনটা ওপর থেকে নিচে পর্যন্ত হতে হবে বলে মত এই অভিজ্ঞ স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের, ‘আমরা এখন খাদের কিনারে চলে গেছি। আমার মতে এখন আমাদের অভ্যন্তরীণভাবে এই নিয়ে বসতে হবে এবং খুঁজতে হবে বার্সার জন্য কোনটা সবচেয়ে ভালো হবে এবং কোনটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ’

শুক্রবার দিনগত রাতের এই পরাজয় ক্যাম্প ন্যুয়ের বাজে পরিস্থিতি প্রকাশ্যে এনেছে। ভুলে যাওয়ার মতো এক মৌসুম কাটিয়েছে কাতালান জায়ান্টরা। এর আগে ২০০৮ সালে পেপ গার্দিওলার আগমনের আগে এমন এক মৌসুম কাটিয়েছেন মেসিরা। এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে লা লিগার শিরোপা খোয়ানোর পাশাপাশি অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের কাছে হেরে সুপারকোপাও হাতছাড়া করেছে সেতিয়েনের শিষ্যরা।

শূন্য হাতে মৌসুম শেষ করায় এরইমধ্যে বার্সায় অনেকের বিদায়ঘন্টা বাজতে শুরু করেছে। সবার আগে সেতিয়েনের বিদায় ঘটার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। পিকে যেমনটা বলছিলেন তেমন কিছুও হতে পারে। অর্থাৎ পিকে, আলবা, ভিদাল, রাকিতিচদের মতো ‘বুড়ো’দের বিদায়ও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আরও কয়েকজনও হয়তো শেষ দেখে ফেলেছেন। এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়াটাই শুধু বাকি।

Share this post

scroll to top