১৫ ও ২১ আগস্টের কুশীলবরা এখনও সক্রিয়। এখনও তাদের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা চলছে বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১৪ আগস্ট) বিকেল ৫ টায় নগর ভবন প্রাঙ্গণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া-মাহফিল ও আলোচনা সভায় অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নিষ্ঠুরতা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। জগতে আর কোনো হত্যাকাণ্ডে নিষ্পাপ শিশুকে হত্যা করা হয়নি, ‘অবলা নারী’কে হত্যা করা হয়নি, টার্গেট করা হয়নি অন্তঃসত্ত্বা নারীকে। সেসময় বিদেশে ছিলেন বলেই প্রাণে বেঁচে যান আমাদের আশার বাতিঘর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা। সেদিন তারা বেঁচে গিয়েছিলেন বলেই আজকে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। হয়েছে যুদ্ধাপরাধের বিচার। কলঙ্কমুক্ত হয়েছে দেশ।
১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাযজ্ঞ এবং পরবর্তীতে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। ১৫ আগস্টের প্রধান টার্গেট ছিল আমাদের ভৌগলিক মুক্তির স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একুশে আগস্টে প্রধান টার্গেট ছিল আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির স্থপতি শেখ হাসিনা। দু’টি ঘটনার কুশীলবরা এখনও সক্রিয়। তাদের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা এখনও চলছে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকায় বসে গণমাধ্যমে মিথ্যাচার করা, নেতিবাচকতার বিষবাষ্প এবং গুজব ছড়ানোই এখন তাদের রাজনীতির মূল হাতিয়ার। শেখ হাসিনা অপরাধীদের বিচারের বেলায় কোনো দলীয় পরিচয় দেখেননি। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করেছেন। নিজের দলের কর্মীদেরও তিনি ছাড় দেননি। তিনি প্রমাণ করেছেন দলীয় পরিচয় স্বার্থরক্ষার ঢাল হতে পারে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং পুনর্বাসন করেছেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে যারা ১৫ আগস্টের বিচারের পথ রুদ্ধ করেছে, তাদের মুখে কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়া মানায় না। যারা একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। শুধু গ্রেনেড হামলার হামলা নয়, বিচারহীনতার সংস্কৃতি হিসেবে জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিল, তাদের মুখে কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে কথা বলা শোভা পায় কি? তাদের লাজ-লজ্জাও জনসমর্থন তলানিতে পৌঁছেছে। এদেশের রাজনীতিতে গুম-খুন-হত্যা ষড়যন্ত্র এবং সাম্প্রদায়িকতা তাদের হাত ঘড়ি শুরু হয়েছে। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি আহসানউল্লাহ মাস্টার, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়া, মঞ্জুরুল ইমাম, নাটোরের মমতাজসহ ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। তাদের নির্যাতন একাত্তরে হানাদার বাহিনীর নির্যাতনকেও হার মানিয়েছে। বিএনপি আজ দুর্নীতি নিয়ে কথা বলছে। অথচ বিএনপি এবং দুর্নীতি সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে। তাদের সময়ের দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দীন আহমদ, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।