ভ্রাম্যমাণ আদালতে দেওয়া আসামিদের আইনি সহায়তা বঞ্চিত করাসহ একাধিক অভিযোগে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সকল কোর্ট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলার আইনজীবীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আকতার উদ্দিন মামুন।
সর্বসম্মতিক্রমে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।
খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আশুতোষ চাকমা বলেন, করোনাকালে সরকার গত ২ জুলাই ভার্চ্যুয়াল কোর্ট পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়। খাগড়াছড়ি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস কোর্ট পরিচালনা না করে ২৭ জুলাই তথ্য-প্রযুক্তি আইন নিয়ে আলোচনা সভা করেন।
আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ একাধিকবার দেখা করে কোর্ট পরিচালনার জন্য অনুরোধ করলেও তা না করে উল্টো আইনজীবীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক দণ্ড দেওয়া আসামিরাও আইনি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এসব কারণেই জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সকল কোর্ট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো রেজুলেশন আকারে আইন, জনপ্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি।
অ্যাডভোকেট আকতার উদ্দিন মামুন সাংবাদিকদের জানান, আমরা আইনজীবিদের নিয়ে জরুরি সভা করেছি। বৈঠকে জেলার সিনিয়র আইনজীবীসহ সকল আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ন্ত্রনাধীন তিন কোর্ট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে এই বিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, তাদের কোন দাবি-দাওয়া ও কোর্ট নিয়ে পরামর্শ থাকলে তারা বলতে পারেন। তারা কোন আলাপ না করে একতরফাভাবে কোর্ট বন্ধ করার সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেটা আইনজীবী হিসেবে তাদের কাম্য হওয়ার কথা না। আর আমরা যারা বিচার পক্রিয়ার সাথে আছি আমাদেরও কাম্য নয়।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলায় গত এপ্রিল, মে ও জুন মাস পর্যন্ত ৬৯০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। এতে ৩,০০২টি মামলার বিপরীতে ১৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। তবে অভিযানে কতজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি।