সরকারের সাথে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করে বর্তমানে দেশের বাইরে বসবাস করছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বিদেশে থাকলেও তিনি সর্বদা দেশের রাজনীতির খোঁজ-খবর রাখেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য না হলে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র অবরোধ আরোপ করতে পারে। এক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া ও ইরানের ওপর যেমন অবরোধ আরোপ করা হয়েছে তেমন অবরোধ আরোপ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
বাংলাদেশের সাবেক বিচারপতি এসকে সিনহা আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে এসকে সিনহা যুক্তরাষ্ট্রের রেজুলেশনটি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সেই আলোচনায় এসকে সিনহা রেজুলেশনের কিছু অংশ পড়ে শুনান। এসকে সিনহা বলেন, তারা (বর্তমান সরকার) নিরপেক্ষ নির্বাচন করছে না এটার প্রমাণ হলো আমেরিকার মতো একটা দেশ, যেমন ভারত, ভারত যেহেতু এটা ভারতের কথা তারা উল্লেখ করেছে। ভারত বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বেনিফিশিয়ারি তারা উল্লেখ করেছে।
তিনি বলেন, এই কারণে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বলছে, আমরা নীরব দর্শক থাকতে পারিন না। গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং বাংলাদেশে, তারা এও বলেছে, গণতন্ত্র এবং একটা ইন্ডিপেনডেন্ট স্টেট হিসেবে আমরা (দেখছি/মনে করছি), গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে কিনা সেটা এই ইলেকশনে প্রমাণ হবে।
রেজুলেশনের উদ্ধতি দিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি বলেন, এবং এটার (যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা) একমাত্র প্রমাণ হলো, রিসেন্টলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটা আইন পাস করেছে। এখানে খুবই কষ্ট লাগল তাদের কয়েকটা রেজুলেশন দেখে। এরপর তিনি ইংরেজিতে পড়ে শুনান।
(গত ১১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশনটি পাস হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে ডেমোক্রেট সদস্য বিল কিটিং কংগেসের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির কাছে রেজুলেশনটি উত্থাপন করেছিলেন।
অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনঃনিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে নিম্নকক্ষের সব সদস্যের সম্মতিতে ওই রেজুলেশনটি পাস হয়)
পরে তিনি রেজুলেশটি ব্যাখ্যা করে সিনহা বলেন, সেখানে বলা হচ্ছে, এটা তো দুঃখজনক। এরপরে তারা বলছে, আরও তারা মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, ইরান এবং উত্তর কোরিয়াকে যে রকম ইকনোমিক সেঙ্কশন (অবরোধ) করা হয়েছে এটা করা হবে। এরপরে আমি তো মনে করি যে, আমাদের লজ্জা পাওয়া উচিত।
এসকে সিনহা ভিডিওতে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার পর শেষের দিকে বলেন, একাদশ সংসদে যে নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর হতে যাচ্ছে এটা কিন্তু আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। আমরা স্বাধীনভাবে একটা সভ্য দেশ হিসেবে টিকতে পারব, না শুধু একটা মানচিত্রের জন্য বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি; এই মানচিত্র বর্তমান যে অবস্থা চলছে, চলতে থাকলে আমরা হারিয়ে যাব।
তিনি বলেন, আজকে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যারা অঙ্গীকারবদ্ধ, পরীক্ষিত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এ সুযোগ যদি আমরা হাতছাড়া করি তাহলে আমরা আমাদের দেশ একটা গভীর সঙ্কটে পড়বে এবং আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।