আইসিসির সভাপতি পদ থেকে শশাঙ্ক মনোহরের সরে যাওয়ার পর প্রায় দেড় মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও তার উত্তরসূরি নিয়োগ করতে পারেনি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বরং সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ‘মিট দ্য চেয়ারম্যান’ পেজে এখনও শশাঙ্ক মনোহরের ছবি ও প্রোফাইল শোভা পাচ্ছে।
গত সোমবার (১০ আগস্ট) আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে পরবর্তী চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সমাধান হয়নি। বরং এই নিয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র মতভেদ। এই মতভেদ চেয়ারম্যান কে হবেন তা নিয়ে নয়। বরং চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্যমতের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান বেছে নেওয়া প্রায় অসম্ভব। ফলে নির্বাচন ছাড়া গতি নেই। কিন্তু কীভাবে হবে নির্বাচন? এই নিয়েই ক্রিকেটের তিন মোড়লের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে কয়েকটি বোর্ড।
বিশ্ব ক্রিকেটের ‘তিন মোড়ল’ তথা ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড চায় সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান বেছে নেওয়া হোক। কিন্তু পাকিস্তানের নেতৃত্বে কয়েকটি দেশ চাইছে নির্বাচন হোক দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে। এই নিয়েই মূলত মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। আইসিসির এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমের কাছে তা স্বীকারও করেছেন।
আইসিসির বর্তমান সদস্য দেশ ও মনোনীত সদস্য মিলিয়ে ভোট দেওয়ার অধিকার আছে ১৭ জনের। ভারতসহ তিন মোড়লের বাকি দুই সদস্য চাইছে এই ১৭ জনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৯ জনের সমর্থন যিনি পাবেন, তিনিই হবেন পরবর্তী চেয়ারম্যান। কিন্তু পাকিস্তান-সহ অন্যান্য দেশগুলো চাইছে ১৭ জনের মধ্যে ১২ জন অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ ভোট যিনি পাবেন তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হোক।
আইসিসির পরবর্তী চেয়াম্যান পদের জন্য এখন পর্যন্ত লড়াইয়ে আছেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী, ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) চেয়ারপার্সন কলিন গ্রেভস এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ডেভ ক্যামেরন। এই তিনজনের যেকোনো একজনকে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আইসিসির চেয়ারম্যান বানাতে চায় তিন মোড়ল। কিন্তু পাকিস্তান-সহ কিছু দেশের আপত্তির কারণে তা হচ্ছে না।
এর আগে গত ৩০ জুন আইসিসির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন শশাঙ্ক মনোহর। যদিও তার দ্বিতীয়বার দায়িত্বগ্রহণের মেয়াদ শেষ হতে আরও ২ বছর বাকি ছিল। ২০১৬ সালে তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তী নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।