চলতি শিক্ষাবর্ষ আর না বাড়িয়ে এ বছরের মধ্যেই ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিভিত্তিক লেখাপড়া শেষ করার পরিকল্পনা করছে সরকার। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই ডিসেম্বরে সব পরীক্ষা নেওয়া হবে। নভেম্বরের মধ্যে তা সম্ভব না হলে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে দেওয়া হবে ‘অটো পাস’।
এই উভয় ক্ষেত্রেই পাঠ্যবই বা সিলেবাসের যে অংশটুকু পড়ানো সম্ভব হবে না, তার অত্যাবশ্যকীয় পাঠ পরের শ্রেণিতে দেওয়া হবে। এ জন্য জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ‘কারিকুলাম ম্যাপিং’ করে দেবে। এ লক্ষ্যেই বুধবার এনসিটিবিতে কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের বৈঠক শুরু হচ্ছে। এ ছাড়া কয়েক দিন ধরে এ নিয়ে ময়মনসিংহে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিতে (নেপ) বিশেষজ্ঞদের বৈঠক চলছে।
গত সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এতে চলতি শিক্ষাবর্ষ ডিসেম্বরেই শেষ করার ব্যাপারে আলোচনা হয়। শিক্ষা সংশ্নিষ্ট দুই মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে শিগগিরই আবারও আলোচনায় বসবে বলে জানা যায়।
এদিকে, উল্লিখিত বিকল্পের আওতায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেটসহ (জেএসসি) পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির চার পরীক্ষাও নিয়ে আসার চিন্তা আছে। নভেম্বরের মধ্যে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব না হলে ডিসেম্বরে স্কুল-মাদ্রাসা পর্যায়ে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত পরিসরে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেডু) থেকে সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। পরে ওই পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি নির্ধারণ করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এ বছরের ডিসেম্বরে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা কার্যক্রম সমাপ্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কারিকুলাম ও নতুন সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরির কাজ করছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন একাডেমি। এ লক্ষ্যে তাদের দুটি পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। একটি হলো- গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যগুলো নিয়ে প্রতিটি বিষয়ের আলাদা সিলেবাস তৈরি করা। দ্বিতীয় হলো ওই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে পিইসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা।