নোয়াখালী-৫ আসনে লড়াই করছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জমজমাট এই লড়াই নিয়ে দুজনের মন্তব্য এখানে প্রকাশ করা হলো।
ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে লড়াই : যা বললেন মওদুদ
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এখনও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু ভোটকেন্দ্র দখল এবং চুরি করতে কেউ পারবেন না। রাতের বেলায় ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখাতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে, বাস্তবে তা নেই তাদের মধ্যে। আমি ৫ বছর কী অবস্থায় এলাকায় ছিলাম, তা আপনারা সবাই জানেন। আমাকে গত রমজানের ঈদে বাড়ি থেকে বের হতে দেয়া হয়নি। পুলিশের গাড়ি আমার বাড়ির সামনে আড়াআড়ি করে রাখা হয়। নেতাকর্মীরা আমার সাথে দেখা করতে আসার পথে পথে তাদের ওপর হামলা হয়। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। কোম্পানীগঞ্জে এমন কোনো নেতা নেই যার বিরুদ্ধে মামলা নেই।
তিনি গতকাল সকাল ১০টায় নোয়াখালী-৫ আসনের কবিরহাট উপজেলার ফরাজী বাজারে গণসংযোগকালে এক পথসভায় এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম, কবিরহাট পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু, বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান হেলেন ও আবদুল হান্নান প্রমুখ। এ ছাড়া তিনি মন্তাজের টেক, নূর সোনাপুর, টেকেরবাজার, কালা মিয়ার পোল, করমবক্স বাজার ও মাওলানা বাজারে গণসংযোগ করেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আরো বলেন, প্রতিনিয়ত আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর মিথ্যা মামলা, হামলা করা হচ্ছে এবং প্রতি রাতে গ্রেফতার চলছে। আওয়ামী লীগ নিজেরা তাদের অফিস ও প্রচারের গাড়ি ভাঙচুর করে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করছে। আমার ক্ষমতার আমলে স্কুল, কলেজ সরকারীকরণ, ফায়ার সার্ভিস, কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ, উপজেলা ভবন, বসুরহাট-কবিরহাট রাস্তা পাকাকরণ ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। কে বেশি উন্নয়ন করছে তা জনগণ আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে এ এলাকার জনগণ ধানের শীষে ভোট দিয়ে তা প্রমাণ করবে।
যা বললেন ওবায়দুল কাদের
আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা কখনো ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। আমার নেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে এসেছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না এলে দেশ আবার অন্ধকারে চলে যাবে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের প্রত্যেক গ্রামকে শহরে পরিণত ও প্রত্যেক পরিবারের একজন বেকার যুবককে চাকরি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের মওদুদ আহমদকে ইঙ্গিত করে আরো বলেন, তিনি ২২ বছর এ এলাকায় ক্ষমতায় ছিলেন, জনগণের জন্য কোনো কাজ করেননি।
জনগণকে কলা দেখিয়েছেন, মুলা ঝুলিয়েছেন, বাঙালিকে হাইকোর্ট দেখিয়েছেন। তার বেলা শেষ হয়ে গেছে। তিনি ওয়াদা দিয়ে রাখেন না, তিনি ভুয়া। গণসংযোগে রাস্তায় নামলে তার ডাকে জনগণ সাড়া দেন না। মওদুদ আহমদের ক্ষমতার আমলে আমার বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেননি। তার সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। সোনাগাজী থেকে সন্ত্রাসী এনে ভোট নেয়ার ষড়যন্ত্র করলেও তা সফল হবে না। আমি গত ১২ বছর এ এলাকায় রাস্তাঘাট পাকা করেছি, স্কুল, কলেজের ভবন নির্মাণ করেছি, বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছি। গত নির্বাচনে আপনাদের দুইটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম- একটি বিদ্যুৎ সংযোগ, অন্যটি রাস্তা পাকাকরণ। এ দুইটি কাজ শতভাগ করে দিয়েছি। বর্তমানে দুইটি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি- প্রত্যেক ঘরে একজন বেকার যুবককে চাকরি এবং প্রতি ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে। আমি যা বলি তা করি, ভুয়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজনীতি করি না।
তিনি গতকাল দুপুর ১২টায় নোয়াখালীর-৫ আসন (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কে টি এম হাট, দাসের হাট, চৌধুরীহাট বাজার, জনতা বাজার, মেহেরুননেছা, মৌলভী বাজার, কদম তলা বাজার, হাজারীহাট এলাকায় গণসংযোগকালে পথসভায় এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা আ’লীগের সহসভাপতি মো: শাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল হক নাজিম প্রমুখ।
বাংলাদেশ আ’লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইস্কান্দার মির্জা শামীম, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, স্বাধীনতা ব্যাকার্স পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নুরুল করিম জুয়েল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লোকনাথ ভৌমিক, বিশিষ্ট সাহিত্যিক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।