সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে হলে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। এই লক্ষ্যে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ টি-২০তে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ করেছে। লিটন দাস, অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে চড়ে ৪ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২১১ রান। টি-২০তে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ২০০ পেরোল বাংলাদেশ।
আরেকটু হলে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটাই গড়ে ফেলত। তেমন একটা ইঙ্গিতই ছিল শুরু থেকে; কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা করতে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। শেষ ওভারে উইন্ডিজদের বলগুলো কেমন যেন সাকিব ও মাহমুদুল্লাহর উইলোকে ফাঁকি দিলো। ফলে এ বছরই মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোতে করা ২১৫ রানই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ হয়ে রইল।
২১১ রানের এ ইনিংসটি বাংলাদেশের টি-২০ ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তবে মিরপুরের মাঠের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এত দিন এ রেকর্ডটি ছিল নিউজিল্যান্ডের দখলে। ২০১৩ সালে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ২০৪ রান করেছিল কিউইরা। এবার ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সে রেকর্ড নিজেদের নামেই লিখে রাখল বাংলাদেশ।
দলের এই বড় সংগ্রহের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ওপেনার লিটন দাসের। ৪ ছক্কা ও ৬ চারে তিনি ৩৪ বলে করেছেন ৬০ রান। এ ছাড়া অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ২৬ বলে অপরাজিত ৪২ (একটি ছক্কা ও ৫ চারে), মাহমুদুল্লাহ ২১ বলে অপরাজিত ৪৩ (৭ চারে), সৌম্য ২২ বলে করেছেন ৩২ রান।
শীতের রাতে সন্ধ্যার পরই মাঠে কুয়াশা পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই শিশিরের কথা মাথায় রেখে টস জিতেও প্রথমে ফিল্ডিং নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্রাথওয়েট; কিন্তু তার সেই সিদ্ধান্তকে বুমেরাং প্রমাণ করল টাইগার ব্যাটসম্যানরা।
সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে গতকাল বাংলাদেশের শুরুটাও হয়েছিল চমৎকার। তামিম ইকবাল ও লিটন দাস ৪ ওভারেই তোলেন ৪২ রান। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে তামিমের বিদায়ে জুটি ভাঙে। ১৬ বলে ১৫ রান করেন তামিম। একপ্রান্তে লিটন ঝড় চলতেই থাকে। সৌম্য সরকারকে নিয়ে ৫৮ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর অবশ্য দু’জনেই ফেরেন। একটু পর মুশফিকও ফিরে গেলে একটু চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে সাকিব-মাহমুদুল্লাহ জুটি সেই চাপকে গুরুত্ব না দিয়ে দলকে নিয়ে যান দুই শ’র ওপরে। পঞ্চম উইকেটে দু’জনে মাত্র ৭ ওভারে ৯১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন।
প্রথম টি-২০তে ব্যর্থতার পর সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-২০তে একের পর এক দৃষ্টিনন্দন স্ট্রোকের পসরা সাজিয়ে ফিফটি তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ওপেনার লিটন দাস। মাত্র ২৭ বলে পাঁচটি চার ও চারটি ছয়ে ফিফটিতে পৌঁছেন লিটন। আউট হওয়ার আগে ছয়টি চার ও চারটি ছয় মেরে মাত্র ৩৪ বলে ৬০ রান করেন লিটন।
তামিম ইকবালের সাথে ওপেনিংয়ে নেমে শুরু থেকেই স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন লিটন। মিরপুরের উইকেটে শুরুতে পেস আক্রমণ দিয়ে বোলিং শুরু করে উইন্ডিজ; কিন্তু লিটনের মারমুখী ব্যাটিংয়ে পঞ্চম ওভারেই পেস আক্রমণ সরিয়ে বাঁহাতি স্পিনার ফ্যাবিয়ান অ্যালেনকে নিয়ে আসেন উইন্ডিজ অধিনায়ক; কিন্তু তাকেও সাবলীলভাবে মোকাবেলা করেন লিটন। খেলতে থাকেন একের পর এক চমৎকার স্ট্রোক। ফিফটি করার পর ব্যক্তিগত ৫৫ রানে কিমো পলের বলে কভারে জীবন ফিরে পান লিটন; কিন্তু দ্বাদশ ওভারে ব্যক্তিগত ৬০ রানে ৩৪ বল খরচায় শেল্ডন কট্রেলের ইনকামিং ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড হন লিটন। টি-২০তে এটি লিটনের দ্বিতীয় অর্ধশতক। এর আগে গত আগস্টে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এই কুল মাস্টার।