আসছে শীতের কাঁপুনি। ঘূর্ণিঝড় ফেথাইর প্রভাবে বৃষ্টির কারণে বেড়েছে শীতের কনকনানি। গতকাল দেশের কয়েকটি অঞ্চল ছাড়া বৃষ্টিও হ্রাস পেয়েছে। ধীরে ধীরে আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করেছে। ফলে তাপমাত্রাও নিচের দিকে নামছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। দিনের তাপমাত্রার চেয়ে রাতের তাপমাত্রা কিছু বেশি কমতে পারে।
আবাহওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে দেশের কিছু অংশ। উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপবলয় নামে যে ঠাণ্ডা হাওয়া এত দিন ভারতের বিহার পর্যন্ত বিরাজ করছিল তা গতকাল থেকে ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এর ধাক্কা শিগগিরই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে লাগতে শুরু করতে পারে।
গতকাল দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে দিনাজপুরে ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনি¤œ তাপমাত্রা বিস্মিত হওয়ার মতো তেমন নিচে নামলেও এত ঠাণ্ডা লাগছে কেন, এ প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটা ঠিক সর্বনি¤œ তাপমাত্রা এ মুহূর্তে খুব বেশি নিচে নামেনি। কিন্তু সারা দিন আকাশ মেঘলা থাকায় এবং কোথাও কোথাও বৃষ্টি হওয়ায় সূর্যের আলো মাটিতে পড়তে না পারায় পরিবেশ উষ্ণ হতে পারেনি। সাধারণত সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবধান কম থাকলে বেশ ঠাণ্ডাই অনুভূত হয়। উল্লেখ্য গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ছিল ২০, রাজশাহী, সিলেটে ২১.২ ও রংপুরে ছিল ২১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, সাধারণত ডিসেম্বরের এ সময়ে বঙ্গোপসাগরে এক অথবা দুইটি নি¤œচাপ হয়ে থাকে লঘুচাপ থেকে। নি¤œচাপ দুর্বল হয়ে গেলেই বৃষ্টি হতে শুরু করে এবং বৃষ্টি কেটে গেলেই উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শীতল বায়ু (উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপবলয়) প্রবেশ করতে থাকে বাংলাদেশে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব দেশের রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, সিলেট ও খুলনা বিভাগের একাংশে পড়ে। এ সময় দেশে শুরু হয় শৈত্যপ্রবাহ।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ফেথাইর প্রভাব গত মঙ্গলবার পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। ওই সময় এটা সাগরে লঘুচাপ আকারে বিরাজ করছিল। গতকাল সেই লঘুচাপটিও গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। বঙ্গোপসাগরে এখন আর কোনো ধরনের চাপ নেই। লঘুচাপ বা এ ধরনের কিছু থাকলে আকাশে মেঘ থাকে, মেঘলা পরিবেশ থাকে। লঘুচাপ শক্তিশালী হলে কখনো কখনো বৃষ্টিও হতে পারে। আবার নি¤œচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে গুরুত্বহীন না হওয়া পর্যন্ত আকাশ থাকে মেঘলা এবং গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হতে পারে। গত মধ্যরাত থেকে দেশের কোনো কোনো অংশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। ঠাণ্ডার সাথে কুয়াশার মাত্রাও বাড়ছে। বিশেষ করে দেশের নদী তীরবর্তী এলাকায় ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করবে। কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো বাধাগ্রস্ত হবে এবং ঠাণ্ডার মাত্রা আরো বাড়বে।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী তিন-চার দিন পর দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। তাপমাত্রা নিচের দিকে ৬ ডিগ্রি পর্যন্ত নামতে পারে।