কুঁচিয়া শিকারে সংসার চলে তাদের

হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শৈলজুড়া গ্রামের বাসিন্দা অর্জুন। করোনার এ সংকটে রোজগারের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন কুঁচিয়া শিকার। অর্জুনের মতো হবিগঞ্জের অনেকেই কুঁচিয়া বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।

শৈলজুড়া গ্রামের অনেকে নদী, খাল, বিল, চা বাগানের লেক, ডোবা, ধানের জমিসহ প্রাকৃতিক জলাশয়ে এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করে কুঁচিয়া শিকার করছেন।

নবদ্বীপ ও মন্টু নামে দুজন বলেন, ‘দৈনিক প্রায় ১০ কেজি কুঁচিয়া শিকার করতে পারছি। প্রতি কেজি কুঁচিয়া দুইশ থেকে তিনশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কুঁচিয়া বিক্রি করে এখন সংসার চলছে। তবে বর্তমানে কুঁচিয়ার দাম একটু কম।’

বাহুবলের অমৃতার বাসিন্দা জামাল বলেন, ‘ওকা (কুঁচিয়া ধরার যন্ত্র) নিয়ে আমরা প্রতিদিন গুঁঙ্গিয়াজুরী হাওর যায়। নির্দিষ্টস্থানে ওকা রেখে আসি। এতে কুঁচিয়া আটকে থাকে। কিছু সময় পর যেয়ে তুলে নিয়ে আসি। অল্প পানিতে কুঁচিয়া ধরা সহজ।’

হবিগঞ্জে মূলত ১২ থেকে ১৪ বছর আগে কুঁচিয়া ধরা শুরু করেন চা বাগানের শ্রমিকরা। প্রথমে তারা কুঁচিয়া ধরে নিজেরাই খেতেন। এরপর বেকার যুবকরা একসময় কুঁচিয়া শিকার করতে থাকেন। এখন এর মাধ‌্যমেই তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন।

আড়ৎ মালিক শাহ আলম বলেন, ‘কুঁচিয়ার স্বাদ মাছের মতো। হবিগঞ্জের হাওর ও পাহাড়ি এলাকার বিল, ডোবা, নদী, ছড়া, পুকুর, জলাশয়ে বিপুল পরিমাণ কুঁচিয়া জন্মায়। এক সময় কুঁচিয়া বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হতো না। এখন হচ্ছে। তবে বর্তমানে দাম কম। তারপরও এগুলো শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন হাজারো লোক। যারা এক সময় বেকার ছিল। জলাশয় থেকে কুঁচিয়া শিকার করে আমাদের কাছে নিয়ে আসে। এরপর আমরা এগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম নিয়ে বিক্রি করি। তবে করোনার কারণে এখন কুঁচিয়া বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহজাদা খসরু জানান, হবিগঞ্জের মাবধপুরের তেলিয়াপাড়ায় বাণিজ্যিকভাবে কুঁচিয়া চাষ হচ্ছে। এছাড়া, প্রাকৃতিকভাবে হাওর ও পাহাড়ের জলাশয়ে প্রচুর কুঁচিয়া জন্মায়। আর এসব কুঁচিয়া শিকার করে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।

Share this post

scroll to top