ঘুরে বেড়াতে কে না ভালোবাসে? তখন যদি এমন কোথাও যাওয়া যায় যে স্থানগুলোর সঙ্গে বিশ্ব রেকর্ড জড়িত, তাহলে ভ্রমণের আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে যুক্ত হয় কৌতূহল। ভ্রমণের স্থান সম্পর্কে কৌতূহল অ্যাডভেঞ্চার যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য সবসময় বাড়তি প্রেরণা। চলুন জেনে নেই তেমন কিছু জায়গার নাম। যেখানে গেলে দুটোই মিলবে।
সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর: বিমানবন্দর থেকেই অনেকে ভ্রমণ গন্তব্যে যান। অথচ বিমানবন্দরই যদি হয় দর্শনীয় ভ্রমণস্থান তাহলে কেমন হয়? এই ভাবনা থেকেই তৈরি হচ্ছে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর। ধারণা করা হচ্ছে এটিই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিমান ওঠা-নামার জায়গা। যদিও ২০১৮ সালে এই বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো আকাশে বিমান উড়েছে, তবুও এর নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। মোট চারটি ধাপে কাজ চলছে; শেষ হবে ২০২৫ সালে। এই বিমানবন্দরের জন্য মোট বরাদ্দ জায়গা প্রায় ১৮,৭৮০ একর। যেখানে পাঁচ লাখ বিরানব্বই হাজার স্কয়ার ফিটজুড়ে থাকবে ডিউটি ফ্রি শপিং ব্যবস্থা। একইসঙ্গে থাকবে হোটেল সুবিধা। এই বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন যাত্রী আসা-যাওয়া করতে পারবেন। ভাবুন একবার- এই বিমানবন্দরের বিশালতার কাছে আটলান্টায় অবস্থিত জ্যাকসন বিমানবন্দরটি যেন লজ্জাই পাবে। কেননা এই বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর প্রায় ১০৭ মিলিয়ন যাত্রী আসা-যাওয়া করে। এবং এটিই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দর।
সমুদ্রে অ্যাডভেঞ্চার : রয়্যাল ক্যারাবিয়ান’স সিম্ফোনি অব দ্য সিস- একটি জাহাজের নাম। টাইটানিকের মতোই এটি সুবিশাল এবং নিজ নামে পরিচিত। এই জাহাজে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পানির স্লাইড রয়েছে। নন্দন পার্ক বা ওয়াটার কিংডমের মতো বিনোদন কেন্দ্রে আমরা অনেকেই পানিতে স্লাইড করেছি, তবে এই জাহাজের পানির স্লাইড আপনাকে অন্য এক অনুভূতির জোগান দিবে। কেননা এই স্লাইডের উচ্চতা ২৩৮ ফিট। এত উঁচু স্লাইডে আপনি অ্যাডভেঞ্চার খুঁজে পাবেন- নিশ্চিত করেই বলা যায়। আর জাহাজটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিনোদন জাহাজ। জাহাজের উচ্চতা প্রায় ১,১৮৮ ফিট। জাহাজে ৬৬৮০ জন যাত্রীর সেবা নিশ্চিত করা যাবে। রয়েছে ২৭৫৯টি কেবিন। এছাড়াও জাহাজে ২৪টি পুল, ২২টি রেস্টুরেন্ট ও বার, ওয়াটার পার্ক, ছোট একটি গলফ কোর্টসহ আরো অনেক ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।
সবচেয়ে বড় হোটেল: মালয়েশিয়ার হাইল্যান্ডে অবস্থিত তিন তারকাবিশিষ্ট এই হোটেলটিকে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হোটেল হিসেবে গণ্য করা হয়। ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড হোটেল নামক দুইটি বড় টাওয়ার বিশিষ্ট এই হোটেলে ৭৩৫১টি কক্ষ রয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বড় হোটেলটি লাস ভেগাসে অবস্থিত; নাম ভেনেটিয়ান রিসোর্ট লাস ভেগাস। এই হোটেলে ৭০৯২টি রুম রয়েছে এবং কনভেশন-এর জন্য প্রায় ২.২৫ মিলিয়ন স্কয়ার ফিট জায়গা বরাদ্দ আছে। একটা সময় এই হোটেলের ক্যাসিনো ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো।
সবচেয়ে বড় পার্ক: আপনার যদি কোনো ন্যাশনাল পার্কে ভ্রমণের ইচ্ছে থাকে তাহলে জেনে রাখুন পৃথিবীতে ৪০০টিরও বেশি ন্যাশনাল পার্ক রয়েছে। তবে আলাস্কায় অবস্থিত র্যানগেল সেন্ট ইলিয়াস ন্যশনাল পার্ক বিশ্বে সবচেয়ে বড়। এই পার্কটি প্রায় ১৩.২ মিলিয়ন একর জায়গা নিয়ে অবস্থিত। এই বিশাল আকৃতির পার্কটিতে কি নেই? তিনটি পাহাড়, হিমবাহ, আগ্নেয়গিরি, নদী, উপত্যকাসহ আরো অনেক কিছুর সমাহার মিলবে এখানে। যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উঁচু পাহাড়ও এই পার্কে অবস্থিত। সুতরাং এক পার্কেই দেখতে পাবেন অনেক কিছু।
সবচেয়ে উঁচু কৃত্রিম রক ক্লাইম্বিং: গিনেজ বুকের ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এবং কৃত্রিম রক ক্লাইম্বিং দেয়ালটি নেভাডা অঞ্চলের হুইটনি পিক হোটেলে অবস্থিত। এই দেয়ালটি প্রায় ১৬৪ ফুট লম্বা হলেও সম্ভবত এটাই সবচেয়ে নিরাপদ এবং কম খরচের। এর উঁচু থেকে শহরের চমৎকার দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। এই জায়গাটি সব ধরনের রক ক্লাইম্বিং এর জন্য উপযুক্ত, এমনকি এখানে শিশুদের জন্যও আলাদা সুব্যবস্থা রয়েছে। অর্থাৎ হোটেলে থাকা খাওয়াও হলো, চুটিয়ে রক ক্লাইম্বিংও হলো।