ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার পাঁচজনই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সামাল দিচ্ছেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। প্রধানমন্ত্রীর বুদ্ধিমত্তায় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বন্টনে ময়মনসিংহ বিভাগ তার যথাযথ মর্যাদা পেয়েছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর আসনের অনুপাতের তুলনায় ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলাতেই ৫ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় ব্যতিক্রম। এছাড়া ময়মনসিংহ জেলাতেই রয়েছেন ২ প্রতিমন্ত্রী। সাধারণত পৃথিবীর ৬৫ উর্ধ্ব অধিকাংশ ব্যক্তিরা শারীরিক ও মানুষিকভাবে দূর্বল হয়ে পরে। নির্ভরশীল হয়ে পরে অন্যের উপর। যার ফলে তারা নিজস্ব চিন্তা চেতনায় কাজ করতে পারে না অন্যের দ্বারা প্রভাবান্নিত হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই দৃষ্টিভঙ্গির আলোকেই ময়মনসিংহ জেলায় অপেক্ষাকৃত তরুণ ২ জনকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করেছেন। তবে ময়মনসিংহ বিভাগের এই পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বিভাগের যোগ্য ও আদর্শবান ব্যক্তিত্ব। তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও পারিবারিক ব্যকগ্রাউন্ডে আওয়ামীলীগের আদর্শ যেভাবে লক্ষণীয় তেমনি স্থানীয়ভাবে তাদের পরিবার পরিজনদের নিয়ে তেমন কোন অভিযোগও নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান মন্ত্রীপরিষদ যেভাবে সাজিয়েছেন তা মূলত একটি ফুলের বাগানের মতো। ময়মনসিংহ বিভাগের তুলনায় আনুপাতিক হারে বেশি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী দেয়ায় ময়মনসিংহ বিভাগের সর্বস্তরের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞ। মেধা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞাশালী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কারণে এখন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক। তাঁর সঙ্গে তুলনা করার মতো এখন অন্তত এই পৃথিবীতে কোনো রাষ্ট্রনায়ক খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ময়মনসিংহ বিভাগের যারা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সামাল দিচ্ছেন তারা হলেন-
মোস্তাফা জব্বার : বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি জগতের কিংবদন্তী, একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার যিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির জন্য পরিচিত হলেও তাঁর কর্মকান্ড কেবল এই জগতেই সীমিত নয়। তিনি নিজ গ্রামসহ দেশব্যাপী সাধারণ শিক্ষার প্রসার ও শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যাপারেও অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর মাইলফলক কাজের মাঝে রয়েছে কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রয়োগ, প্রচলন ও বিকাশের যুগান্তকারী বিপ্লব সাধন করা, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার প্রসার এবং বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান – এর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয়ী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির একজন সৈনিক হিসেবে কাজ করে তিনি অবিস্মরণীয় অবদান রেখে চলেছেন। আর ৬৯ বছর বয়সী মোস্তাফা জব্বার সংসদ সদস্য না হওয়ায়ও তাকে মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট হিসেবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী হিসেবে বাচাই করেন প্রধানমন্ত্রী। মোস্তাফা জব্বার নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃতি সন্তান।
শরীফ আহমেদ : চরম প্রতিকুলতার মাঝেও যিনি বঙ্গবন্ধু মেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ থেকে এতটুকু পিছপা হননি তিনি হলেন জনপ্রিয় শামছুল হক। শামছুল হক দক্ষতার সাথে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দিয়েগেছেন। যোগ্য পিতার উত্তরসুরি হিসেবে শরীফ আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরীফ আহমেদকে বেঁচে নেন। প্রথমে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়া হলেও পরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দ্বিতীয়বার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
কে এম খালিদ : কে এম খালিদ আনন্দমোহন কলেজ থেকে তিনি ভিপি হিসেবে ছাত্রসংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছিলেন তারপর কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য হিসেবে এবং ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের সদস্য হয়ে ৭৫ পরবর্তী সময়ে মুজিব আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য লড়াই সংগ্রামে অংশগ্রহন করেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। সততা নিষ্ঠা যার চরিত্রের প্রদান গুণ। সদরের বাসিন্দা হওয়া সত্বেও প্রথমবারের মত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তাগাছা থেকে নির্বাচন করে এমপি নির্বাচিত হন। এমপি নির্বাচনের পর মুক্তাগাছাবাসী তার কর্মদক্ষতা সততা ও অসহায় জনগণের প্রতি ভালবাসার গুণে মুগ্ধ হয় এবং তাকে আপন করে গ্রহন করে নেয়। যেকারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রিয় কে এম খালিদকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।
আশরাফ আলী খান খসরু : ১৯৬৯ সালে ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি নেত্রকোণা সরকারি কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। তিনি নেত্রকোনা জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। আশরাফ আলী খান প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ যশোর সেনানিবাসে আক্রান্ত হন। এরপর তারা সেখান থেকে বেরিয়ে চৌগাছায় মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি সিলেটের গৌরীপুর ছাড়াও কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার কোদালকাটি, কামালপুর যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। যেকারণে আওয়ামীলীগের এ ত্যাগী নেতাকে প্রধানমন্ত্রী সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বাঁচাই করেছেন।
মোঃ মুরাদ হাসান : মোঃ মুরাদ হাসান ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখার ‘কার্যকরী সদস্য’ ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখার ‘সাংগঠনিক সম্পাদক’, ২০০০ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখার ‘সভাপতি’, ২০০৩ সালে ৫ম কংগ্রেস এ বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ‘কার্যকরী সদস্য’ নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ জামালপুর জেলা শাখার ‘কার্যকরী সদস্য’, ২০১৪ সালে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের ‘কার্যকরী সদস্য’, ২০১৫ সালে জামালপুর জেলার ‘স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক’ নির্বাচিত হন। এছাড়াও, ২০১৭ সালে তিনি ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির ‘কার্যকরী সদস্য’ নির্বাচিত হয়ে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছেন। যেকারণে প্রধানমন্ত্রী মোঃ মুরাদ হাসানকে পুণ:মন্ত্রণালয় বন্টনেও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত করেন।