নেত্রকোনার খালিয়াজুরিতে নৌকার মাঝি কাইয়ূম হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নৌকার ভেতরে অনৈতিক কার্যকলাপ মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করায় হাত পা বেঁধে নদীতে ফেলে দেয় হয় মাঝিকে। আটককৃতরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানায়।
নদীতে ফেলে দেয়ার কয়েকদিন পর ওই মাঝির মরদেহ ভেসে উঠার উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় একজনকে আটক করলে তার দেয়া তথ্য মতে বাকি চার জনকে গ্রেফতার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ। সেখানেই উঠে আসে এসব চাঞ্চল্যকর।
সোমবার (২২ জুন) দুপুরে খালিয়াজুরি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওসি এটি এম মাহমুদুল হক এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন সাংবাদিকদের কাছে।
তিনি জানান, খদ্দেরদের সাথে পার্শ্ববর্তী শাল্লা উপজেলা থেকে যে নারী এসেছিল তাকে এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তাকেও খুঁজছে পুলিশ।
ওসি জানান, ঘটনার প্রধান আসামি সৈয়দ নূর (৭ জুন) কাইয়ুমের নৌকাটি ভাড়া করেন। এরপর শান্নায় পৌঁছে কাইয়ুমকে খাওয়া দাওয়া করায় সে। এরপর আরো চার সহযোগীসহ একজন নারীকে খবর দিয়ে নিয়ে আসে সে। রাতে নৌকার মধ্যে ওই নারীর সাথে অনৈতিক কাজ করার ঘটনা মাঝি কাইয়ুম মোবাইল ফোনে ধারণ করে। এ নিয়ে তাদের সাথে কথাকাটি হয়। কাইয়ুম টাকা চাইলে একপর্যায়ে নৌকার বৈঠা দিয়ে কাইয়ুমের মাথায় আঘাত করে সে। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য হত্যাকারীরা কাইয়ুমের হাত পা বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়।
এদিকে কাইয়ুমের নৌকাটি তারা ১৭ হাজার টাকায় সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুরে বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে যায় বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
অন্যদিকে ৭ জুন কাইয়ূম নিখোঁজের পর ১০ জুন দুপুরে আদাউড়া হাওরে ওই মাঝির মরদেহ ভেসে উঠে। পুলিশ উদ্ধারের পর পরিবারের লোকজন তা শনাক্ত করে ওই মৃত ব্যক্তিই কাইয়ুম।
১১ জুন কাইয়ুমের বড় ভাই মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসীর নির্দেশে নানা কৌশল অবলম্বন করে যে ব্যক্তি নৌকাটি ভাড়া নিয়েছিল সেই সৈয়দ নূরকে ১২ জুন আটক করা হয়। তার দেয়া স্বীকারোক্তিতে আরো ৪ জনকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বুধবার (১৭ জুন) আদালতে প্রেরণ করা হয়। এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন: আমানীপুর গ্রামের মো. আলামিন, মো. শামীম, আমীর হামজা ও কামাল হোসেন।