যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আইনজীবীদের জীবন-জীবিকার স্বার্থে দেশের সব আদালতের নিয়মিত কোর্ট চালু করতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোমতাজউদ্দিন আহমদ মেহেদী এ আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, গত ১৩ মার্চ থেকে সুপ্রিম কোর্ট ও ২৬ মার্চ থেকে দেশের সব আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিগত তিন মাস আইনজীবীরা নিয়মিত কোর্ট করতে না পারায় অধিকাংশ আইনজীবী চরম অর্থ সংকটে পড়েছে এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকার ভার্চ্যুয়াল বিচার ব্যবস্থা চালু করেছে। বাংলাদেশের শতকরা ৯৫ শতাংশ আইনজীবী প্রশিক্ষণ না থাকায় ও ইন্টারনেট সুবিধার অভাবে ভার্চ্যুয়াল কোর্টে মামলা করতে পারছেন না। অধিকাংশ আইনজীবীর সঞ্চিত টাকা নেই। ‘বাবার সামনে সন্তানের কান্না করোনায় মৃত্যুর চেয়েও ভয়ংকর’ তাই অধিকাংশ আইনজীবী স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত কোর্ট চালু করার পক্ষে।
আবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে নিয়মিত কোর্ট না থাকায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি যাদের আপিল দায়রা জজ আদালতে এবং হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন আছে, তারা আইনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত এবং হাজার হাজার আসামি পলাতক আছে, তারা আইনের আশ্রয় লাভের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে ফেরারি জীবন-যাপন করছেন এবং হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন ব্যতীত অন্য কোনো আইনে নতুন কোনো মামলা ফাইলিং হচ্ছে না। এ অবস্থায় আইনজীবীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
‘করোনা একটি দীর্ঘ মেয়াদী বৈশ্বিক সমস্যা। কোভিড-১৯ কতদিন স্থায়ী হবে তা কেউই জানে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের মতে মানব জাতিকে দীর্ঘদিন ধরে করোনা মোকাবিলা করেই টিকে থাকতে হবে। প্রয়োজন সচেতনতা ও সাবধানতা। জীবন তো আর থেমে থাকতে পারে না এবং জীবিকা ছাড়া জীবন অচল। ’
এমতবস্থায় সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত নিয়মিতভাবে চালু করার আবেদন করেন এ আইনজীবী। যিনি সাধারণ আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক।