ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে ভারতবিরোধী বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে অন্তত সাতজন বেসামরিক লোক নিহত ও অপর ২২ জন আহত হয়েছেন। শনিবার এক বন্দুকযুদ্ধে তিন স্বাধীনতাকামী যোদ্ধা এবং এক সেনা নিহত হয়। ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। ভারতীয় সেনারা বিক্ষোভকারীদের নির্বিচার গুলি চালালে এই বিপুলসংখ্যক বেসামরিক লোকের হতাহতের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় পুলিশ ও বাসিন্দারা জানান, শনিবার ভোরে পুলওয়ামা অঞ্চলের দক্ষিণের একটি গ্রামে অভিযান চালায় ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী। সেখানে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করলে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। এতে তিন বিদ্রোহী ও এক সেনা নিহত হয়। এ ছাড়া আরেক ভারতীয় সেনা আহত হয়। স্বাধীনতাকামীদের হত্যার এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় জনগণ। স্বাধীনতাকামীদের সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসেন কয়েক শ’ মানুষ। মিছিলে ভারতীয় দখলদারিত্বের অবসানের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেয়া হয়। এ সময় ভারতীয় বাহিনী তাদের ওপর তাজা গুলি, ছররা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। এতে সাতজন বেসামরিক নিহত ও অন্তত ২২ জন আহত হন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দু জানায়, সাত বেসামরিক নাগরিকের নিহতের ঘটনায় পুলওয়ামার একাধিক অঞ্চলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাবাহিনী বিক্ষোভ দমনে টিয়ার গ্যাস, ছররা গুলি ও তাজা গুলি ব্যবহার করছে। এসব সংঘর্ষে আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কার পুলওয়ামা অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের প্রতি তরুণদের সমর্থন বাড়ছে। প্রায়ই স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের সমর্থনে রাজপথে নামছে সেখানকার তরুণরা। একই সময়ে সেখানে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীও হামলা বাড়ায়েছে। ২০১৮ সালে এখন পর্যন্ত ২৩৮ জন স্বাধীনতাকামী, সরকারি বাহিনীর ১৫০ জন ও ১৫০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। ২০০৯ সালের পর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে হতাহতের সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ।