পাকিস্তানের সাকলাইন মুস্তাকের পর ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় স্পিনার হিসাবে ওয়ানডেতে করেছেন হ্যাটট্রিক। প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ছুঁয়েছেন ২০০ উইকেটের মাইলফলক। শুধু বল হাতে নয়, ব্যাট হাতেও তুলেছেন তান্ডব। টাইগারদের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্রুততম ফিফটিতে আশরাফুলের সঙ্গী হয়েছেন। ২০০৮ সালে প্রথম টাইগার ক্রিকেটার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে। বলছি, বাংলাদেশ জাতীয় দলের বাঁহাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাকের কথা।
আজ এই টাইগার ক্রিকেটারের জন্মদিন। ১৯৮২ সালের এই দিনে জন্ম নেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অসংখ্য জয়ের এই নায়ক। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান এই ক্রিকেটারকে।
বাংলাদেশ বরাবরই বাঁহাতি স্পিনারের খনি। এনামুল হক মনি, মোহাম্মদ রফিকের পর সেই মশালটা এসেছিল রাজ্জাক, এনামুল হক জুনিয়রের হাতে। এনামুল জুনিয়র না পারলেও বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছেন রাজ্জাক।
২০০৪ সালে এশিয়া কাপে হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক। সে বছর খেলতে পেরেছেন মোটে ৫ ম্যাচ। পরের বছর দলে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ১ ম্যাচে। তবে রাজ্জাক নিজের জাত চেনাতে শুরু করেন ২০০৬ সাল থেকে। সে বছর উইকেটের তালিকা দীর্ঘ করে দলে জায়গা পাকাপোক্ত করে নেন।
সে থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দারুণ পারফরম্যান্সের বদৌলতে একই বছর টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি দলেও হয় অভিষেক। যদিও ফিটনেস জটিলতার কারণে টেস্ট সফর বেশি লম্বা হয়নি তাঁর। টেস্টে ১২ বছরের ক্যারিয়ারে খেলতে পেরেছেন মাত্র ১৩ টি ম্যাচ। সেখানে ২৮ উইকেটের পাশাপাশি করেছেন ২৪৮ রান। তবে ওয়ানডেতে দীর্ঘদিন দলকে সার্ভিস দিয়ে গেছেন রাজ্জাক। ১০ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৫৩ টি ম্যাচ খেলেছেন এই ক্রিকেটার। নিয়েছেন ২০৭ উইকেট। ব্যাট হাতেও আছে ৭৭৯ রান। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ৩৪ ম্যাচে ৪৪ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি করেছেন ৪১ রান।
এই ক্রিকেটারের জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আইসিসি তাদের পেইজে লিখে, ’১৩ টেস্ট, ১৫৩ ওয়ানডে ও ৩৪ টি-টোয়েন্টি তে শিকার ২৭৮ উইকেট। ২০১০ সালে দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিক করেন রাজ্জাক এবং বাংলাদেশের পক্ষে যৌথভাবে দ্রুততম পঞ্চাশের রেকর্ডও তাঁর দখলে। শুভ জন্মদিন রাজ্জাক।’
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে থেমে গেলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এখনও ঝড় তুলছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ইতিহাসে বোলার হিসেবে যত রেকর্ড করা যায়, সম্ভব সব রেকর্ড তাঁর দখলে। বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণিতে ৬০০ উইকেট শিকার করেছেন এই বাঁহাতি স্পিন জাদুকর। ১৩৭ ম্যাচে সে সংখ্যা এখন ৬৩৪ উইকেটে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও লিস্ট ‘এ’- তেও আছে ৪১২ উইকেট।
জাতীয় দলের জার্সি হয়ত আর গায়ে উঠবে না রাজ্জাকের। তবে এখন পর্যন্ত জাতীয় দল এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজেকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যে বাকীদের জন্য সেটি বেঞ্চমার্ক হয়েই থাকবে।