ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের পর এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করলেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী।
রাহুলের দাবি, চীনা সেনা অনায়াসে ভারতের সীমান্তে ঢুকে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে। অথচ ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে নীরব।
বুধবার এক টুইটবার্তায় এমন দাবি করেন রাহুল। তবে কংগ্রেস এমপি রাহুলের এই বক্তব্যের বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি মোদি।
এর আগে একই অভিযোগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে আক্রমণ করেছিলেন রাহুল।
গত রোববার বিহারে এক ভার্চুয়াল জনসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন, ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি এখন বিশ্বনন্দিত। গোটা পৃথিবী এখন স্বীকার করে নেয় যে, আমেরিকা ও ইসরাইলের পর আর কোনো দেশ যদি নিজেদের সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে, তাহলে সেটা হলো ভারত।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মির্জা গালিবের একটি উর্দু কবিতা টুইট করেন রাহুল। অমিতের উদ্দেশে কটাক্ষ করেন, গোটা দেশ জানে ভারতের সীমান্ত পরিস্থিতি কেমন। তবে আপনার এই ‘কল্পনা’ দেশবাসীকে খুশি রাখার ভালো পন্থা।
অমিত শাহের উদ্দেশে রাহুলের করা এই তির্যক মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার সঙ্গেও টুইটারে বাদানুবাদ চলে রাহুলের। তবে এই ইস্যুতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রথমবার কাঠগড়ায় তুললেন রাহুল।
সম্প্রতি চীন-ভারতের মধ্যে দুই দফায় হাতাহাতি ও সংঘাতের পর গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিপুল সেনা মোতায়েন করে চীন। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারতও সেনা মোতায়েন করে যথাযথ জবাব দেয়ার হুমকি দেয়।
গত এক মাস ধরে চলা উত্তেজনার পর সীমান্তে শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বৈঠক হয়।
ওই বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় যে, ভারত ও চীন ‘বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে সীমান্তবর্তী পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে’ সম্মত হয়েছে।
তবে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, চীনা সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডের অনেকটাই ভেতরে প্রবেশ করেছে। অথচ ভারত সরকার এই ইস্যুতে আশ্চর্যজনকভাবে নীরব।
প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রতিরক্ষামন্ত্রী কারো মুখেই এই ইস্যু নিয়ে আক্রমণাত্মক সুর শোনা যায়নি। সরকারের এই নীরবতাকেই লাগাতার কাঠগড়ায় তুলে আসছেন রাহুল। তার অভিযোগ সীমান্ত নিয়ে সরকার নীরব থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন দেশবাসী।