১৭ মাস আগে ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) সুবিধাভোগীর তালিকাভুক্ত হলেও ১৫ জন নারীর ভাগ্যে জুটেনি তাদের প্রাপ্য বরাদ্দ। তাদের বরাদ্দে ৭ হাজার ৬৫০ কেজি চাল ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মাতাব্বররা। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নে। এ ব্যাপারে বরাদ্দ বঞ্চিতরা প্রতিকার চেয়ে উপেেজলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন।
এছাড়াও ঈদের আগেই ওই ইউনিয়নের দুই মাসের (এপ্রিল-মে) ভিজিডির বরাদ্ধকৃত চাল উত্তোলন হলেও অজ্ঞাত কারণে ৩০ কেজি করে চাল পাননি ৩শ২৮ কার্ডধারী। এনিয়ে উপকারভোগিীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সুত্র ও সুবিধা বঞ্চিতদের দেওয়া লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বোকাইনগর ইউনিয়নের মিরিকপুর, নাহড়া, দিউপাড়া, দরুন কৃষ্ণপুর ও মাসুদনগর, দড়িয়াপুর ও গড়পাড়া গ্রামের ১৫জন নারীকে ভিজিডি তালিকা ভুক্ত করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ছাড়াও স্থানীয় মাতাব্বরগণ জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি নেন। পরে দীর্ঘ দিনেও তাঁদের তালিকাভুক্ত হওয়ার কোনো হুদিস না থাকায় ওই নারীরা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে খোঁজ নিলে তাঁদের জানানো হয় এখনও কার্ড হয়নি। তালিকা ভুক্ত হলেই জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া মোবাইল নাম্বারে তাদের অবহিত করা হবে।
বরাদ্দ বঞ্চিত অভিযোগকারীরা হলেন, মিরিকপুর গ্রামের হয়রত আলীর স্ত্রী শেফালি আক্তার, কার্ড নং-১৭৪, মিলন মিয়ার স্ত্রী রেনু আক্তার, কার্ড নং-১৮৮, হযরত আলীর স্ত্রী মুর্শিদা কাড নং-১৮৮, সেকুল মিয়ার স্ত্রী রেজিয়া কার্ড নং-১৮৫। মাসুদনগর গ্রামের দোলেনা কার্ড নং-১৯৬। দিউপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের স্ত্রী রুমা আক্তার কার্ডনং-২৫৬। নহড়া গ্রামের জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মিনা আক্তার কার্ড নং-১১০,আব্দুর গনির স্ত্রী রেখা আক্তার কার্ড নং-১১২,রতন মিয়ার স্ত্রী আছিয়া আক্তার কার্ড নং-১১১। দত্তবাড়ি গ্রামের পৃথিস চন্দ্র দেবনাথের স্ত্রী সবিতা রাণী দেবনাথ কার্ড নং-২৮৪, দড়িয়াপুর গ্রামের কিতাব আলী স্ত্রী মনেসায়ারা বেগম কার্ড ন!-১৯৭, বিল্লাল খানের স্ত্রী বিলকিস বেগম কার্ড নং-৩০৩ ইব্রাহিম খানের স্ত্রী সবিতা আক্তার কার্ড নং-৩০৪, আব্দুল আলীর স্ত্রী আঙ্গুরা খাতুন কার্ড নং ৩২৮ ও গড়পাড়া গ্রামের লিটন মিয়ার স্ত্রী রেহেনা কার্ড নং-১৬। কৃষ্ণপুরে গ্রামের লিটন মিয়ার স্ত্রী হাসি কার্ড নং-২৮০। তাঁরা জানান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে প্রতিমাসে কার্ডধারীদের ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হলেও তাঁরা বঞ্চিত থেকেছেন। রুমা আক্তার জানান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে তিনি জাতীয় পরিচয় পত্রসহ ছবি দিয়েছিলেন। পরে কার্ডের কোনো খবর পাইনি। পরে তাঁর স্বামী খোঁজ করে জানতে পারেন তাঁর নামে ভিজিডি কার্ড হয়েছে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে। এর পর থেকে তাঁর নামে বরাদ্ধের চাল কে বা করা তুলে খাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বোকাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা যে চাল পায়না তা আমার জানা নেই। যদি আগে জানাইতো তাহলে একটা ব্যবস্থা করা যেতো। এখন খোঁজ নিবো। অন্য দিকে এপ্রিল-মে মাসের বরাদ্ধের চাল বিতরণ প্রসঙ্গে বলেন,‘এইডা তো আমার মনে নেই। দেইখ্যা জানাইতে অইবো।’ তবে উপজেলা খাদ্যকর্মমকর্ততা সিদ্ধার্থ শংকর তালুকদার বলেন, যথা সময়েই চেয়ারম্যান দুই মাসের বরাদ্ধ উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন।
তদারকি কর্মকর্তা সহকারী শিক্ষা অফিসার আবু রায়হান বলেন, আমি এই বষয়ে কিছুই জানি না। আমাকে জানিয়ে বরাদ্ধ উত্তেলন করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেঁজুতি ধর সাংবাদিকদের জানান জানান, বরাদ্ধ বঞ্চিত নারীদের একটি অভিযোগ তাঁর কাছে পৌঁছেছে। তদন্তের জন্য মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা পারভিন আকন্দ বলেন, জুন ফাইনালের কারণে সময় পাচ্ছি না। তবে নারীদের ডেকে এনে কথা শুনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।