গাজীপুরের টঙ্গীতে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল নয়টা থেকে টঙ্গীর গাজীপুরা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় সড়কের উভয়পাশে যানজটের ফলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
পুলিশ, কারখানার শ্রমিক ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আজ সকাল নয়টার দিকে স্থানীয় তানাজ ফ্যাশন লিমিটেডের কয়েক শ শ্রমিক গাজীপুরা এলাকায় জড়ো হন। তাঁরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে সড়কের উভয় পাশের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকার পর পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। এরপর আবার যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ জানায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কারখানার কার্যাদেশ স্থগিত হয়ে গেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি। এসব কথা বলে কারখানার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকেরা আজ সকালে কারখানায় কাজ করতে এসে ওই নোটিশ দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে তাঁরা একত্রিত হয়ে গাজীপুরা এলাকায় ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা এ অবস্থা চলে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপসহকারী কমিশনার থুয়াই অংপ্রু মারমা বলেন, কারখানাটির বিভিন্ন বিভাগে শ্রমিক আছেন ২ হাজার ৮২০ জন। এর মধ্যে কার্যাদেশ না থাকায় শ্রম আইন–২০০৬ অনুযায়ী প্রায় ১২ শর মতো শ্রমিক ছাঁটাইয়ের একটি নোটিশ দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের বেতনসহ যাবতীয় পাওনা ৪ জুনের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নোটিশে। কিন্তু শ্রমিকেরা তা মানেন না, তাঁরা চাকরি চান। তাই সকাল থেকে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পুরো সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শ্রমিকেরা। কেউ মাঝ সড়কে বসে আবার কেউ দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করছেন। এতে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কে যানজট লেগে যায়। গণপরিবহন চালুর প্রথম দিন আজকে বের হয়ে অনেকেই বিপদে পড়েন। যান চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যাচ্ছেন গন্তব্যে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের কয়েকজন বলেন, তাঁরা কাজ চান। করোনাভাইরাসের ওই দুর্যোগে তাঁরা এমনিতেই বেকায়দায়। তার উপর চাকরি চলে গেলে তাদের পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না। তাই মানুষের ভোগান্তির কথা জেনেও বাধ্য হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা। কারখানাটিতে অপারেটর হিসেবে কাজ করেন নিলুফা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার আয়ে পুরো পরিবার চলে। কিন্তু চাকরি চলে গেলে পুরো পরিবার পথে বসে যাবে। মালিকপক্ষের এ সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। প্রতিবাদ জানাতে আমরা রাস্তায় নেমেছি।’