করোনাকে জয় করলেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-ইমরান রুহুল ইসলাম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান।
আজ বুধবার দুপুরে তাঁদের করোনা পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ বলে জানান নেত্রকোনা সিভিল সার্জন ডা. তাজুল ইসলাম খান।
গত ১১ মে ইউএনও, ওসি এবং তিন স্বাস্থ্যকর্মীসহ কেন্দুয়ায় ছয়জন, বারহাট্টায় তিনজন, আটপাড়ায় একজন ও মদনে একজনসহ ১১ জন করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসায় করোনায় আক্রান্ত হন।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল জেলায় প্রথম দুজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ২১০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আর সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৮৬ জন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পরীক্ষায় নমুনা পাঠানো হয় তিন হাজার ২৭২ জনের, ফল পাওয়া গেছে তিন হাজার ১৪৯ জনের।
প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজন জানায়, কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে এলাকার লোকজনকে ঘরমুখো ও নিরাপদ রাখতে শুরু থেকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ঢাকা থেকে পোশাকশ্রমিক নিয়ে আসা গণপরিবহন বন্ধ রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে দিন-রাত ছুটে চলেছেন তাঁরা। তাঁদের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও তাঁরা থেমে থাকেননি। সরকারি বাসায় চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আইসোলেশনে থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। দাপ্তরিক কাজকর্ম ছাড়াও নিজ উপজেলার অন্য আক্রান্তদের খোঁজখবর নিয়েছেন প্রতিনিয়ত।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘আমি আজ দুপুরে খবর পেয়েছি গতকালের নমুনা পরীক্ষার ফলে আমার নেগেটিভ এসেছে। এর একদিন আগের পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার।’
তিনি আরো বলেন, ‘হালকা কাশি ও হালকা গলাব্যথা, পেটের সমস্যা ছাড়া আমার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তেমন কোনো উপসর্গ ছিল না। ময়মনসিংহ ল্যাবে পরপর দুবার তাঁদের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত না হওয়ায় আমাদের ছাড়পত্র দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।’
প্রথমেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ওসি মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, ফলমূল, ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্সে জাতীয় ওষুধ খাওয়া, পরিবার পরিজন আর শুভানুধ্যায়ীদের অনুপ্ররেণায় এবং ভালোবাসায় আমি করোনাকে জয় করতে পেরেছি।’
করোনায় কোনো ভয় বা গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান। মনোবল শক্ত করে নিয়ম মেনে চললে সহজেই করোনা জয় করা যায় বলেও জানান করোনাজয়ী দুই কর্মকর্তা।
তাঁরা আরো কৃতজ্ঞতা জানান নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসীর প্রতি। যাঁরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন রকম সহযোগিতা করেছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলসহ কৃতজ্ঞতা জানান উপজেলাবাসীর প্রতি।