প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারনে গেল মার্চ থেকেই বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন থমকে আছে। দু’মাসের বেশি সময় ধরে ক্রিকেট অঙ্গন বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে ক্রিকেট বোর্ডগুলো। তাই দ্রুত ক্রিকেট ফেরাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে কিছু দেশের বোর্ড। যার প্রেক্ষিতে নড়চড়ে বসেছে ক্রিকেটের প্রধান সংস্থা আইসিসি
ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট ফেরাতে শুক্রবার আলোচনা করছে আইসিসির চিকিৎসা কমিটি। সেখানে একটি নির্দেশিকা বা গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে তারা। এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে ঘরোয়া-আন্তর্জাতিকসহ যেকোন ক্রিকেটে।
আইসিসির চিকিৎসা কমিটি গাইডলাইনের শুরুতেই বলা হয়েছে, ক্রিকেট যখনই শুরু হোক, সেটি যেন নিরাপদে শুরু হয়, সেটিই হলো প্রধান লক্ষ্য। নিজ নিজ দেশের সরকারের নির্দেশননা মেনে চলতে হবে ক্রিকেটারদের। আইসিসির মনে করছে, দলের সাথে যদি একজন চিফ মেডিক্যাল অফিসার রাখা হয়, তবে তা মেনে চলা সহজ হবে।
গাইডলাইনে আরও আছে, সদস্যদের সফরের আগে অন্তত ১৪ দিনের আইসোলেশন ক্যাম্পের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি ক্রিকেটারের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে ও কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে। শুধুমাত্র আন্তর্জাতিকই নয়, ঘরোয়া ও অনুশীলন ম্যাচেও করোনা পরীক্ষা রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
আইসিসি আরও জানিয়েছে, ক্রিকেটারেরা যেন সোয়েটার, টুপি বা তোয়ালে আম্পায়ারদের হাতে তুলে না-দেন। ক্রিকেটারদের মধ্যে সারা ম্যাচে দেড় মিটারের দূরত্ব রাখার কথাও বলে হয়েছে আইসিসি নির্দেশিকায়।
যদিও ফিল্ডিং সাজানোর ক্ষেত্রে সব সময় তা রক্ষা করা সম্ভব হবে কি না, সেটি নিয়ে চিন্তা থাকছে। কারন স্লিপে ফিল্ডারদের সাথে দূরত্ব রাখা কঠিনই।
অনুশীলনে দূরত্ব রাখতে, ছোট-ছোট গ্রুপে অনুশীলনের কথা বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বা ঘরোয়া বা অনুশীলনের সময় একত্রে ওয়াশরুম ব্যবহারের সর্তক থাকতে হবে।
খেলা বা অনুশীলন চলাকালীন, যদি কোনো ক্রিকেটারের করোনার লক্ষণ দেখা দেয় তবে সকল খেলোয়াড়ের পরীক্ষা করাতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট একটা সময় আইসোলেশনে থাকতে হবে। মাঠে আনন্দ-উল্লাস উদযাপনেও নির্দেশনা থাকছে।
ক্রিকেট দলগুলোর সফরের ব্যাপারে গাইডলাইনে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নিজ দেশের সরকারের নির্দেশনা মেনে সফর করতে হবে। বোর্ডগুলোকে চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে হবে। ফ্লাইটের ভেতর সকলের সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া সফরে হোটেলের এক রুমে একত্রে থাকা যাবে না। সেখানেই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
ক্রিকেটারদের সাথে সব সময় স্যানিটাইজার রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং কিছুক্ষণ পর পর স্যানিটাইজার ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
দীর্ঘদিন পর মাঠে ফেরায় বোলারদের ইনজুরির কথা চিন্তা করে বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলেছে আইসিসি। ম্যাচে ফেরার আগে বোলারদের টেস্টে আট থেকে ১২ সপ্তাহ, ওয়ানডেতে ছয় সপ্তাহ ও টি-২০তে পাঁচ থকে ছয় সপ্তাহের পুরোপুরি অনুশীলনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছে আইসিসির চিকিৎসা কমিটি। এছাড়া ক্রিকেটের সাথে থাকা বয়স্ক সদস্যদের দিকেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।
আইসিসির গাইডলাইনের মধ্যে, ক্রিকেট মাঠে আম্পায়ারদের জন্য থাকছে বড় নির্দেশিকা। বিষয়টা বেশ আকর্ষণীয়। আম্পায়ারদেরও গ্লাভস পরতে হবে। কারন খেলার চলাকালীন বার-বার বল ধরতে হয় আম্পায়ারদের। বিশেষ করে ওয়ান ডে ক্রিকেটে দু’দিক থেকে দু’টি বল ব্যবহার করা হয়। ওভার শেষে সেই বলটি পরে তুলে দেয়া হয় আম্পায়ারের হাতে।
সূত্র : বাসস