নেত্রকোনায় ব্যবসায়ীর ৪শ’ মণ ধান নিয়ে ট্রাকচালক উধাও, আটক ৩

নেত্রকোনায় ধান ব্যবসায়ীর ৪শ’ মণ ধান আত্মসাতের অভিযোগে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২৩ মে) বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সব ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে আটকদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।

আটকরা হচ্ছেন- গাজীপুরের শ্রীপুর থানার আব্দার গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে মো. রফিক (৫০), নেত্রকোনার বারহাট্টা থানার দেওলি গ্রামের ওসির উদ্দিনের ছেলে মো. শামীম (২৭) ও সদর থানার ঠাকুরাকোনা গ্রামের মৃত আব্বাছ আলীর ছেলে রতন মিয়া (৩০)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী জানান, গত ১৮ তারিখ বারহাট্টা উপজেলার ধান ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম একটি ট্রাকে প্রায় ৪শ’ মণ ধান তুলে দেন। আনুমানিক সন্ধ্যা সাতটার দিকে ট্রাকটি ছেড়ে যায়। ট্রাকটি টাঙ্গাইল জেলা মেসার্স গীতা অটোরাইস মিলে পৌঁছে দেয়ার কথা। পথিমধ্যে ট্রাক ড্রাইভার হৃদয় মিয়ার সঙ্গে যাওয়ার পথে ব্যবসায়ীর একাধিক বার কথা হয়।পরদিন নিয়ম মতো ধান পৌঁছে যাওয়ার কথা থাকলেও সেখানে ধান না পৌঁছা এবং ট্রাক ড্রাইভারের ফোন বন্ধ থাকায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ট্রাক ড্রাইভারের নাম্বার দিয়ে নেত্রকোনা থানা পুলিশকে অবহিত করে ব্যবসায়ী শফিকুল।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশ গত চারদিন অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। সেইসাথে ৪শ’ মণ ধান বিক্রির প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।

এ সময় পুলিশ জানায়, এটি পরিকল্পিত সিন্ডিকেট প্রতারক চক্র। এরা হয়তো বিভিন্ন স্থানে ব্যাবসায়ীদের ধান ট্রাকে করে নিয়ে আত্মসাৎ করে। তাই ব্যবসায়ীরা যেন জেলার বাইরে ধান বিক্রির সময় চালকের আইডি কার্ড বা ছবি তুলে রাখেন। সব নাম ঠিকানা নিশ্চিত হয়ে পরে তাদের ধান বা মালামাল পাঠান। এতে করে কোনো অঘটন ঘটলে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া যাবে।

এদিকে অভিযান পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম জানান, এরা প্রথমে ট্রাকটিতে ধান ভরে পরবর্তীতে ট্রাকের নাম্বার চেইঞ্জ করে ফেলে। এরপর বারহাট্টা ও শ্যামগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজারে কয়েক বস্তা করে ধান বিক্রি করে। এভাবে এক এক জায়গায় তারা সমস্ত ধান বিক্রি করে ফেলে। পরবর্তীতে স্থানীয় আসামী শামীম ট্রাকের হেলপার আরাফাতের কাছ থেকে মোবাইল ফোনটিও চুরি করে।

এদিকে অজ্ঞাত আসামি করে ব্যবসায়ী শফিকুল বারহাট্টা থানায় ১৯ মে একটি সাধারণ ডায়েরি করে। এই ডায়েরির প্রেক্ষিতে হেলপারের চুরি হওয়া ফোনের সূত্র ধরেই আমরা ওই প্রতারণার সাথে জড়িত তিনজনকেই আটক করেছি। এদের কার্যক্রমে ধারণা করা হচ্ছে এরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের সাথে এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটিয়েছে।

Share this post

scroll to top