ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কে ডাকাতির সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে মনির (৩৫) নামে এক কুখ্যাত ডাকাতকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মনির নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার কাচাকান্দা গ্রামের মহিবুল্লাহর ছেলে। গ্রেফতার মনিরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ভৈরব সার্কেলের এএসপি রেজওয়ান দ্বীপুর দিক নির্দেশনায় কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ অফিসার কুলিয়ারচর থানার এস আই আবুল কালাম আজাদ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভৈরব থানা পুলিশ ফোর্স ও ভিকটিম মো. শফিকুর রহমানকে সাথে নিয়ে ভৈরব থানার ডাকাতি মামলা নং- ১৫ (৪) ২০ এর কুখ্যাত ডাকাত মনিরকে গত ১৫ এপ্রিল শুক্রবার রাতে ভৈরব বাজার থেকে আটক করে।
আটককৃত মনিরের তথ্য অনুযায়ী ভৈরব কালিকাপ্রসাদ উত্তরপাড়া তার বাসা থেকে ডাকতিকৃত মালামালের মধ্যে দুই শত টাকার নোট ১১টি, মোবাইল সেট দুইটি, দুইটি আংটি, একটি আইফোন, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি সেট ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১৫টি টর্সলাইট উদ্ধার করে ডাকাতি মামলার রহস্য উদঘাটন করেন।
এস আই আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই ডাকাত চক্রটি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর, ভৈরব হাইওয়ে রোডে গভীর রাত্রে যাত্রীদের প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটর সাইকেল ও অন্যান্য গাড়ি আটকিয়ে গাড়িসহ যাত্রীদেরকে ফাঁড়ির রোডে নিয়ে গিয়ে তাদের কাছ থেকে মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যাওয়াই তাদের দীর্ঘদিনের পেশা। এই ডাকাত চক্রটি দীর্ঘদিন ধরা না পরার কারণে নির্বিঘ্নে বিশেষ করে ভৈরব এলাকায় ডাকাতি করে মানুষকে নিঃস্ব এবং আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এর আগে ওইদিন ১৫ মে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানা এলাকা থেকে ডাকত দলের সদস্য নূরে আলম নূরাকে গ্রেফতার করা হয়। তার তথ্য অনুযায়ী ভৈরব বাজার থেকে কুখ্যাত ডাকাত মনিরকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে। দ্রুতই তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
অপর দিকে কুখ্যাত ডাকাত মনির পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ভৈরববাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল শনিবার ভোর ৪টার দিকে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের কুলিয়ারচর ও ভৈরব সীমানার মাঝামাঝি আকবরনগর বাসস্ট্যান্ডে একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। শনিবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে কুলিয়ারচর উপজেলার আদমখার কান্দি গ্রামের মৃত গোলাম রহমানের ছেলে মো. শফিকুর রহমান (৪২) নিজস্ব নিশান এক্সট্রাইল জিপ গাড়ি যোগে স্ত্রী সন্তান ও এক অতিথি নিয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে তার ঢাকার বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ভোর ৪টার দিকে আকবরনগর বাসস্ট্যান্ড পৌঁছার সাথে সাথে মুখোশ পড়া অবস্থায় অস্ত্রধারী একদল দুর্ধর্ষ ডাকাত তাদের গাড়ির সামনে একটি গাছের ডুম ফেলে গাড়ির গতিরোধ করে। পরে ডাকাতদলের সদস্যরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গাড়ির ড্রাইভারকে নামিয়ে ডাকাতদলের এক সদস্য গাড়িটি চালিয়ে রাস্তার পূর্বদিকে একটি রাস্তায় নিয়ে তাদের নিকট থাকা নগদ ৪৫ হাজার টাকা, ৪টি দামি মোবাইল সেট ও স্বর্ণালংকারসহ এক কার্টন ওষুধ লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর রাস্তায় দায়িত্বরত কুলিয়ারচর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (ভৈরব থানায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) কাজী রকিব ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে দেখে ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মো. শফিকুর রহমানের গাড়ির ড্রাইভার মো. নাঈম মিয়া বাদী হয়ে ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১৫(৪)২০২০ ইং।