সিনেমার মতোই নাটক সাজিয়েছিলেন গৃহবধু মুক্তি। যা প্রকাশ করেছিলেন সামাজিক মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে লাশ বানিয়ে ছবি প্রকাশ করে। এরপর সেই ছবি তার নিজের পরিবারের কাছে প্রেমিকের মাধ্যমে পাঠান। এতকিছুর পরও শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। তাদের সেই নাটক রুপালি পর্দার অভিনয়কেও হার মানিয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নাটোর জেলা পুলিশ ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থেকে প্রেমিক আবিদসহ কথিত মৃত গৃহবধূ মুক্তিকে উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) দুপুরে নাটোর পুলিশ সুপারের অফিসে চত্বরে এক ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, ৬-৭ মাস আগে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর এলাকার বড়াইগ্রামের বাসিন্দা ও মেডিকেল কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি আকমল হোসেনের স্ত্রী মুক্তির সাথে ফেসবুকে প্রেম হয় ময়মনসিংহের কেবল ব্যবসায়ী আবিদের। পরে মুক্তি তার বিয়ের কথা গোপন রেখে আবিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে তারা দু’জন পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ১১ মে মুক্তি তার বাবার বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কোন্দইল যাওয়ার বায়না ধরে স্বামীর কাছে। পরে আকমল হোসেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুরে লেগুনায় তুলে দেন। এরপর প্রেমিক আবিদ সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়।
পালানোর ৩-৪ দিন আগে মুক্তিকে হত্যা করা হয়েছে এমন ভঙ্গিমায় কয়েকটি ছবি মুক্তি মোবাইলের মাধ্যমে এডিট করে রাখে। পরে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর ছবিগুলো তার স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রীর (জা) মোবাইলে পাঠায়।
সেই সঙ্গে একটি মেসেজ পাঠায় যে ‘মুক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। তার লাশ খুঁজে নে’। এতে করে মুক্তির বাবার বাড়ি ও তার স্বামীর পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। সবাই আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েন।
পরবর্তীকালে গত সোমবার তার স্বামী নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরে নাটোর পুলিশের একটি দল তথ্যপ্রযুক্তি এবং ময়মনসিংহ পুলিশের সহায়তায় কথিত ভিকটিম মুক্তি এবং তার প্রেমিক আবিদকে ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করে।
এ সময় নিজেকে সবার কাছ থেকে আড়াল করতেই খুনের নাটক সাজিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে মুক্তি। পরে তাদের দু’জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।