করোনাভাইরাসের প্রভাবে এমনিতেই শ্রমিক সংকটের কারণে চলতি বোরো মৌসুমের ধান কাটা্র কাজে ব্যাঘাত ঘটছে উপরন্তু দেখা দিয়েছে জোঁকের আক্রমণ। ফসলি ক্ষেতে জোঁকের উৎপাতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন কিশোরগঞ্জ জেলার প্রান্তিক চাষিরা। এতে করে কৃষিকাজ ব্যাহত হওয়ায় লোকসানে পড়ছেন চাষিয়ার।
গোথালিয়া গ্রামের মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া জানান, গত বছর প্রায় ৭ একর জমিতে ধান করেছিলাম। প্রতি বিঘা (স্থানীয়ভাবে ৩৫ শতাংশে ১ বিঘা ধরে) যেখানে উচু জমিতে ধান কাটাতে শ্রমিকের মজুরি আসে ২ হাজার টাকা, সেখানে বিলের জমিগুলোতে জোঁকের কারণে বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা শ্রমিককে দিতে হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে পরিচিত এই লাদিপুরি বিলের প্রায় ১ হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে দিনকে দিন জোঁকের পরিমাণ ও উৎপাত বেড়েই চলছে। গত ৫ বছরে এলাকার অনেক কৃষক জোঁকের কামড়ে আহত হয়েছেন।
অন্যজন ঊরুতে জোঁকের কামড়ে আহত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এছাড়া একই গ্রামের কৃষক মানিক মিয়া (৩৫), শ্যামল চন্দ্র সন্ন্যাসী (৪৫), জহরলাল সন্ন্যাসী (৩২), বাবুল মিয়া (৪৬), রাখাল চন্দ্র সন্ন্যাসী (৩৩) জোঁকের কামড়ে অনেক দিন অসুস্থতায় ভুগছিলেন। চলতি মৌসুমে কৃষকরা ধান কাটার সময় দু’পায়ে লম্বা ধরনের মোজা পরে ধান কাটছেন।
এ বিষয়ে বাজিতপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. রকিবুল হাসান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা অবগত আছি। এই সমস্যা দুইভাবে সমাধান করা যায়। প্রথমত, কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটা। এতে করে ধান কাটায় জোঁকের কোনো ভয় ছিল না এবং বিঘা প্রতি খরচও কৃষকের কম হতো। আমরা এই এলাকার কৃষকদের মেশিন ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ করেছিলাম, হয়তো বেশি টাকার কারণে ক্রয় করেনি তারা। দ্বিতীয়ত, রাসায়নিকভাবে দমনের জন্য অ্যামোনিয়াম সালফেট অথবা সিরিয়াল নামক এক প্রকার কীটনাশক জোঁকের সংক্রমণ দেখা দিলে অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করা।