করোনায় চীনে বেকার হয়েছেন প্রায় ৮ কোটি মানুষ

chaina workplaceগত ডিসেম্বরে নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর প্রায় দুই মাস লকডাউনে ছিল চীন। এখনো পর্যন্ত দেশটিতে স্বাভাবিক জনজীবন আগের অবস্থায় ফেরেনি।

চলমান এই অনিশ্চয়তার মধ্যে বেকার হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। বেইজিংয়ের সরকারি হিসাব বলছে, শহরাঞ্চলে এ বছর পাঁচ শতাংশেরও বেশি মানুষ নতুন করে বেকার হয়েছেন। গত মার্চ মাসে বেকারত্বের হার ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এক মাস পর এপ্রিলে তা বেড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে। সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে সিএনএন বিজনেসের পরিসংখ্যান বলছে, শহরাঞ্চলে প্রায় দুই কোটি ২৭ লাখেরও বেশি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন।

সিএনএন বলছে, বেইজিংয়ের এই হিসাবে গ্রামাঞ্চলের কৃষক, শ্রমিকদের বিবেচনা করা হয়নি। এ ছাড়াও, শহরাঞ্চলের নির্মাণশিল্প, ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে স্বল্প বেতনে কাজ করা প্রায় ২৯ কোটি অভিবাসী শ্রমিকদেরও বিবেচনা করা হয়নি। তাদেরকেসহ বিবেচনা করলে মার্চ পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত আট কোটি মানুষ বেকার হয়েছেন বলে ধারণা করছেন চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সের অর্থনীতিবিদ ঝ্যাং বিন।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চীনের বাস্তবতা অনুযায়ী অন্তত আট কোটি মানুষ অর্থাৎ ১০ শতাংশ কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়াটা সামঞ্জস্যপূর্ণ।

চীনের অর্থনীতি নিয়ে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি। সিএনএনকে চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক মুখপাত্র জানান, শ্রমবাজার চাপের মধ্যে আছে। তবে, সার্বিক চাকরির ক্ষেত্র এখনো ‘স্থিতিশীল।’

বছরের প্রথম চার মাসেই চীনে অন্তত আট কোটি মানুষ চাকরি হারালেও সামনে আরও বিপদের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বছরই দেশটিতে রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ করবেন। প্রায় ৮৭ লাখ শিক্ষার্থী চাকরি জীবনে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হবেন। ফলে শিগগিরই চীনের চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে, বেকার হয়ে পড়বেন আরও অনেক মানুষ।

লকডাউন শিথিল করার পর ইতোমধ্যেই সীমিত হারে অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেছে চীন। তবে, এতে পুরনো গতি ফিরে পেতে আরও বহুদিন অপেক্ষা করতে হবে। চীনের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, মহামারির কারণে এ বছর গত এক দশকের মধ্যে দেশটির প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে কম। এ ছাড়াও, ১৯৭৬ সালের পর প্রথমবারের মতো দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হচ্ছে।

Share this post

scroll to top