করোনাভাইরাসের মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতিতে আপাতত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাসা ফিরোজায় রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার বোন সেলিমা ইসলাম।
শুক্রবার তিনি বলেন, দেশের বর্তমান যে সার্বিক পরিস্থিতি, বৈশ্বিক যে অবস্থা এখন তো অন্য কোথাও চিকিৎসা সম্ভব নয়। সেজন্য তাকে বাসায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আর যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেই টিমে যারা সদস্য তারা সবাই এক্সপার্ট ফিজিশিয়ান।
মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া তার গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ ওঠেন এবং গত প্রায় দেড় মাস সেখান থেকে আর বের হননি।
খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, উনি কোয়ারেন্টিনেই চিকিৎসার মধ্যে আছেন। তার শারীরিক অসুস্থতা এখনো কাটেনি, অগ্রগতি হচ্ছে ধীর গতিতে। এখনো তার হাত-পায়ে ব্যথা আছে, হাতের আঙুল আগের মতই বাঁকা হয়ে আছে, ডায়াবেটিসও পুরো নিয়ন্ত্রণে নেই। খালেদা জিয়া যেন দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন এজন্য দোয়া চেয়েছেন তার বোন সেলিমা।
দুর্নীতির দায়ে ২৫ মাস সাজা ভোগের পর ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে গত ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার আগে প্রায় এক বছর কারা তত্ত্ববাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
বাসায় ফেরার পর থেকে চিকিৎসকদের একটি দলের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। কয়েক সপ্তাহ পরপর তারা এসে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে যান।
সর্বশেষ গত সপ্তাহেও তারা ফিরোজায় গিয়েছিলেন।
ওই চিকিৎসক দলের একজন বলেন, উনার চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী ব্যাপার। দীর্ঘ সময় ফিজিও থেরাপি,ফলোআপ আর মনিটরিংয়ের মধ্যে তাকে থাকতে হবে।
পরিবারের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসায় খালেদা জিয়ার সময় কাটে ইবাদত-বন্দেগিতে। মাঝে মাঝে টেলিফোনে দুই ছেলের স্ত্রী ও নাতনীদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও লন্ডন থেকে চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
সেলিমা ইসলাম বলেন, অসুস্থতা থাকলেও উনি রোজা রাখছেন। প্রতিদিন আমরা দুই বোন একসঙ্গে ইফতার করি। আর কেউ থাকে না। রাতে খাবারও একসঙ্গে হয়। আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী (শামীম ইস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা) বিকালে এসে সব কিছু ঠিকঠাক করে দিয়ে যায়।
গুলশানে খালেদা জিয়ার ভাড়া বাড়ি ‘ফিরোজা’র নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, বাসায় প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। চিকিৎসক দলের সদস্য আর কয়েকজন নিকট আত্মীয় ছাড়া আর কারও ঢোকার অনুমতি নেই।