শুধু মাত্র এপ্রিল মাসেই ময়মনসিংহে বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বজ্রপাতে সারাদেশে ৭৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদিকে সারাদেশে এপ্রিলেই মারা গেছেন ৭০ জন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন নারী এবং ৬৮ জনই পুরুষ। এদের মধ্যে নয়জন কিশোর ও তিনজন শিশু রয়েছে। এই সময়ে বজ্রাঘাতে আহত হয়েছেন ২১ জন। তার মধ্যে ১৫ জন পুরুষ এবং ছয়জন নারী রয়েছে। আর দুজন হলো কিশোর।
সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়।
সাধারণত জানুয়ারি মাসে প্রচণ্ড শীত থাকায় এ মাসে বজ্রপাত হয় না। তবে এবার কনকনে শীতের মধ্যেও জানুয়ারি মাসে বজ্রপাতে নিহত হয়েছে তিনজন। তারা সবাই পুরুষ। ফেব্রুয়ারি মাসে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও মার্চ মাসে ছয়জন এবং এপ্রিল মাসে ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
মার্চে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে দুজন নারী ও চারজন পুরুষ। একই সঙ্গে মার্চে আহত হয়েছেন ছয়জন।
এপ্রিল মাসে মোট নিহত হয়েছেন ৭০ জন। এর মধ্যে নারী আটজন এবং ৬২ জন পুরুষ। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশু তিনজন, কিশোর সাতজন ও কিশোরী দুজন। এছাড়া এপ্রিল মাসে বজ্রাঘাতে মোট ১৫ জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ১৩ জন পুরুষ এবং দুজন নারী।
নিহতদের মধ্যে ৪০ জন নিহত হয়েছেন কৃষি কাজ করার সময়। নৌকায় বসে মাছ ধরার সময় দুজন। মাঠ থেকে গরু আনার সময় নিহত হয়েছে ১২ জন। আম কুড়ানোর সময় একজন, ঘরে বসে মারা গেছেন চারজন। পাথর উত্তোলনের সময় দুজন। মাঠে খেলা করার সময় একজন। বাড়ির আঙিনায় খেলা করার সময় দুজন।
ফাঁকা রাস্তায় চলার সময় চারজন। রিকশা চালানোর সময় দুজন। গাড়িতে থাকাকালীন দুজন। অন্যদিকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার সময়, নির্মাণ কাজ করার সময় ও হাওরে অবস্থানকালেসহ বিভিন্ন সময় বজ্রপাতে নিহত হয়েছে ছয়জন।
বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ টেলিভিশনের দেয়া তথ্যগুলো থেকে এই পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে।
বজ্রপাতে হতাহতের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে পটুয়াখালী সাতজন, গাইবান্ধা ও কক্সবাজারে পাঁচজন, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও লক্ষীপুরে চারজন করে, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহে তিনজন করে বজ্রপাতে মারা গেছেন।
অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, যশোর, পিরোজপুর ও হবিগঞ্জে দুজন করে মারা গেছেন। এছাড়া রাজবাড়ী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, চাঁদপুর, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, খুলনা, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, ভোলা, বরগুনা, দিনাজপুর, শেরপুর, জামালপুরে একজন করে মারা গেছেন।
পটুয়াখালী ও সিলেট জেলায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে সিলেট বিভাগে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে- ১৪ জন, বরিশাল বিভাগে- ১১ জন, চট্টগ্রাম-১৪ জন, রাজশাহী- ৪ জন, খুলনা- ৭ জন, সিলেটে- ১৩ জন, রংপুর- ৬ জন, ময়মনসিংহ- ৯ জন।
এর আগে ২০১৯ সালে সারাদেশে বজ্রপাতে নিহত হন ২৪৬ জন। এর মধ্যে ৩০ জন নারী, ৬ জন শিশু, ৮ জন কিশোর-কিশোরী এবং ২০২ জনই পুরুষ।