ময়মনসিংহ জেলায় আগাম জাতের ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে পুরোদমে মাড়াইপর্ব শুরু হতে আরও দুই-এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলার কৃষি খামারবাড়ির হিসাবমতে এখন পর্যন্ত ১৬ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। এবার জেলায় চলতি মৌসুমে দুই লাখ ৫৯ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ লাখ ২৫০ মেট্রিকটন। এদিকে ফলন ভালো হলেও, ধানের ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষক।
জেলার কৃষি খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল মাজেদ বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় দুই লাখ ৫৯ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ লাখ ২৫০ মেট্রিকটন। গেল এক সপ্তাহ আগে জেলায় আগাম জাতের বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। শ্রমিক সংকট তেমন একটা নেই, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই পুরোদমে বোরো ধান কাটা শুরু হবে।
ধানের ফলন ভালো হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এবার এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মুখে না পড়লে লক্ষ্যমাত্রার বেশি ধান উৎপাদন হবে।
তিনি আরও জানান, ময়মনসিংহের ১২ উপজেলায় ধান কাটা এবং মাড়াইয়ের জন্য ৩৭টি হারভেস্টার মেশিন ও ২০টি ধান কাটার জন্য রিপার মেশিন রয়েছে। এসব মেশিন দিয়ে চাষীরা তাদের ধান সহজেই কাটতে পারবের, শ্রমিক সংকটও তেমন একটা হবে না। উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কৃষকের সুবিধা-অসুবিধা দেখছেন এবং সমস্যা সমাধান করছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে ফলন ভালো হলেও দাম নিযে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। সরকার নির্ধারিত দামে ধান কেনার বিষয়টি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ময়মনসিংহ সদরের চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৩ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। এরমধ্যে এক একর জমিতে আগাম জাতের বোরো ধান পেকেছে। দুই-একদিনের মধ্যেই ওই পাকা ধান কাটবেন। গ্রামের ধান কাটার শ্রমিকরা চুক্তিতে ধান কাটছে। এলাকায় নতুন হারভেস্টার মেশিন নামিয়েছেন কৃষকরা। মেশিন দিয়ে কম খরচে এবং কম সময়ে ধান কাটা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
একই এলাকার কৃষক আবুল কাশেম জানান, পার্শ্ববর্তী জেলা নেত্রকোনা এবং কিশোরগঞ্জের হাওড়ে ধান কাটা শেষ হলে ওই শ্রমিকরা এলাকায় চলে আসবেন। তখন ধান কাটায় কোনও সমস্যা হবে না। আগামী ১০-১২দিনের মধ্যে বোরো আবাদের ধান পুরোদমে কাটা শুরু হলে মাড়াই মেশিন ব্যবহারের পাশাপাশি শ্রমিকরাও ধান কাটার কাজে নিয়োজিত হবেন।
তবে বাম্পার ফলন হলেও সরকার ঘোষিত ধানের দাম তারা পাবেন কিনা এই নিয়ে চিন্তিত কৃষক আবুল কালাম। কৃষক পর্যায়ে ধান কেনার জোর দাবি জানান তিনি।