জামালপুরে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ত্রাণের স্লিপের তালিকা তৈরি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
এসময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকের ভিডিও ক্যামেরা ভাংচুরসহ সময় টিভি ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ক্যামেরাপারসনকে মারধর করেছে তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ।
জামালপুর পৌরসভার সাহপুর এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। ওই এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জামালপুর পৌরসভার সাহপুর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ঠিকাদার এসএম মোয়াজ্জেম হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ। ত্রাণের স্লিপের তালিকা তৈরি নিয়ে শনিবার বিকেলে দু’গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে পুলিশ। কিন্তু ইফতারের পর ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে আবারো ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে সংর্ঘষে লিপ্ত হয় দু’গ্রুপের সমর্থকরা।
খবর পেয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন আবুল কালাম আজাদ ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ক্যামেরাপারসন আল-আমীন। এ সময় ভিডিও ক্যামেরা ভাংচুরসহ ওই দুই ক্যামেরাপারসনকে মারধর করে আহত করেছে কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিনের ছেলে অন্তর ও তার সহযোগীরা।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ত্রাণের স্লিপের জন্য প্রতিজনের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করছে কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন। বিষয়টি জানাজানি হলে সে ভাবে, এটি আমি ছড়িয়েছি। আমার ভাই তোফাজ্জল চা বিক্রি করে আসার পথে তাকে মারধর করেছে কাউন্সিলর হেলালের ছেলে অন্তরসহ রাজু ও সৌরভ নামে তিন যুবক। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের লোকজনদেরও মারধর করেছে তারা।
অন্যদিকে কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, পৌর মেয়রের নির্দেশে বাড়িতে বসে ত্রাণের ৪৯০ জনের তালিকা তৈরি করছিলাম। এ সময় মোয়াজ্জেমের নেতৃত্বে শতাধিক লোক স্লিপের জন্য অতর্কিত হামলা চালায়।
ক্যামেরাপারসনদের মারধর ও ক্যামেরা ভাংচুরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন, আমার লোকজন নয় বরং মোয়াজ্জেমের লোকজনই ক্যামেরা ভাংচুর করেছে।
এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালেমুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, দু’পক্ষের সংঘর্ষ এড়াতে তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ক্যামেরাপারসনদের মারধর ও ক্যামেরা ভাংচুরের ঘটনাসহ তিনটি মামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।