ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের উত্তরকান্দী গ্রামে জাহাঙ্গির হোসেন মাতুব্বর নামে এক ওয়ার্ড মেম্বারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে একটি আমা গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
জাহাঙ্গির হোসেন কাইচাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার। তিনি বিবাহিত এবং স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছেন।
এ ঘটনায় তার ভাই লাবলু মাতুব্বর নগরকান্দা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে এই আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গিরের সমর্থকেরা প্রতিপক্ষের আটটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
জাহাঙ্গির মাতুব্বরের বড় ছেলে সাব্বির মাতুব্বর বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে ঘুমাতে যান। এরপর ৩টার দিকে সেহরি খাওয়ার জন্য উঠে দেখেন তার মা ঘরে শোয়া কিন্তু বাবা নেই। এরপর প্রথমে ঘরের বাথরুমে না পেয়ে বাইরের বাথরুমে খুঁজতে গিয়ে দেখেন পাশের আমগাছে তার বাবার লাশ ঝুলছে।’
কাইচাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ঠান্ডু বলেন, ‘সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের দেয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির একটি তালিকা করেন জাহাঙ্গির হোসেন। ওই তালিকায় স্ত্রী মাহফুজা বেগম, ছেলে সাব্বির হোসেন ও ওমর সানি এবং মালয়েশিয়াফেরত ভাই বাবুল মাতুব্বর ও আরেক ভাই লাবলু মাতুব্বরসহ লাবলুর স্ত্রী রেজির নাম সুবিধাভোগীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির পর বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর তাড়াহুড়া করে তালিকা করায় কিছু ভুল হয়েছে জানিয়ে পরে ওই তালিকা সংশোধন করেন জাহাঙ্গির।’
কবির হোসেন ঠান্ডু বলেন, ‘তবে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন জাহাঙ্গির মাতুব্বর। সম্প্রতি তিনি দক্ষিণকান্দী গ্রামের বাড়ি ছেড়ে উত্তরকান্দীতে নতুন বাড়ি করেছেন। ওই বাড়িরই একটি আম গাছে ঝুলে ভোররাতের দিকে আত্মহত্যা করেন তিনি।’
এদিকে জাহাঙ্গির হোসেনের আত্মহত্যার খবর জানাজানি হলে তার সমর্থকেরা রাতেই তার প্রতিপক্ষ নাসিম মাহমুদ সাবুল, তারা মিয়া, সুরুজ মিয়া, বালা মাতুব্বর, ফারুক মাতুব্বর, জয়গুন বেগম, রেজাউল মাতুব্বর ও মহি মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ করা হয়।
এ ব্যাপারে নাসিম মাহমুদ সাবুল বলেন, হামলাকারীরা তার প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি ও লুটপাট করেছে।
নগরকান্দা থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা বলে জানতে পেরেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই লাবলু মাতুব্বর একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন।
প্রতিপক্ষদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ঘটনার পর সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এসআই কালামের নেতৃত্বে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।