জমিতে বোরো মৌসুমের ধান পাকতে শুরু করেছে। কৃষকরাও ধান কাটার জন্য অধীর আগ্রহে করছে অপেক্ষা। তবে দেশের চলমান করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে সারাদেশ থেকেই শ্রমিক আসা প্রায় বন্ধ। তাই জমির ধান নিয়ে মাথায় হাত স্থানীয় কৃষকদের। জমিতে পাকা ধান থাকলেও শ্রমিক সংকটে তা ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরেও প্রতিবছরের মতো এবারও বোরো মৌসুমের আবাদ হয়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলের কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছে। তবে এই আশাই যেনো নিরাশায় পরিণত হয়েছে করোনার প্রভাবে।
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সারা দেশেই চলছে অঘোষিত লকডাউন। মানুষ তেমন একটা বের হচ্ছেন না ঘর থেকে। তবে কৃষকরা পড়েছে চরম বিপাকে । জমিগুলোতে পাকা ধান থাকলেও কাটার জন্য লোক পাচ্ছেন না তারা। তার উপর সামনেই ঝড় বৃষ্টি পূর্বাভাস থাকায় এই চিন্তা দিনকে দিন আরো বেড়েই যাচ্ছে।
এমন অবস্থায় দুর্গাপুরে চন্ডিগড় গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে জমির ধান কেটে দিচ্ছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা। স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জনের একটি দল অসহায় কৃষকদের পাকা ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার চন্ডিগড়ের সাতাশি গ্রামে দেখা যায় স্বেচ্ছাসেবকরা আনন্দের সাথে জমি থেকে পাকা ধান সংগ্রহ করছে। কোন কোন জমিতে হাঁটু সমান পানি থাকলেও ওই পানিতে ভিজেই কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছেন এই স্বেচ্ছাসেবকরা। পর্যায়ক্রমে গ্রামের সকল অসহায় কৃষকের পাকা ধান কেটে দেবেন বলেও জানান তারা।
স্থানীয় কৃষক হাফিজ উদ্দিন জানান, এবছর ফসল ভালই হইছে। কিন্তু করোনাভাইরাস এর কারণে ভয়ে কেউ ধান কাটতে চায় না । আর দূর থেকে কোনো শ্রমিক এলাকায় আসে না । আমরা কিভাবে ধান ঘরে তুলব তা নিয়ে অনেক চিন্তায় ছিলাম। পরে স্থানীয় যুবক ভাইদের জানালে তারাই এগিয়ে এসে আমার দশ কাঠা জমির ধান বিনামূল্যে কেটে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন।
স্বেচ্ছাসেবক ও চন্ডিগড় ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা ছাত্রলীগ কর্মীরা সবসময় মানুষের পাশে চেষ্টা করেছি । তবে বর্তমানে দেশের করোনা ভাইরাসের কারণে অনেকটাই আতঙ্কগ্রস্ত। এমন অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা বোরো মৌসুমে আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। আমরা ছাত্রলীগ কর্মীরা কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ মোতাবেক গ্রামের প্রতিটি অসহায় মানুষের ধান কেটে তাদের বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে বিনামূল্যে।