জাপানের উপকূল এলাকায় দুইটি মার্কিন যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত দুইটি বিমানের একটি থেকে একজন মেরিন সেনাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরো ছয়জন সেনা। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দুই দেশের কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-১৮ ফাইটার ও সি-১৩০ ট্যাঙ্কার বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ জাপানের আইওয়াকুনি নৌ-সেনা ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে বিমান দুটির সাথে কন্ট্রোল টাওয়ারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, বৃহস্পতিবার মধ্য আকাশে রিফুয়েলিং মহড়া দেয়ার সময় ভুলক্রমে দুইটি বিমানের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের পক্ষ থেকে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা জানায়, জাপানের হিরোশিমার কাছাকাছি ইয়াকুনি থেকে সাতজন আরোহীসহ উড্ডয়ন করে এফ/এ-১৮ ও কেসি-১৩০ হারকিউলিস রিফুয়েলিং বিমানটি। এফ/এ-১৮ বিমানটিতে পাঁচজন ও কেসি-১৩০ বিমানটিতে দুইজন আরোহী ছিলেন। মেরিন কোরের এয়ার স্টেশনের নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই দুর্ঘটনার সময় দুটি বিমানে থাকা সাতজন মেরিন সেনার মধ্যে এ পর্যন্ত একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তল্লাশি ও উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন ও জাপানি কর্মকর্তারা।
ঘটনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাকেশি ইওয়াইয়া জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি এফ/এ-১৮ হর্নেট যুদ্ধবিমানটিতে ছিলেন।
তিনি আরো বলেন,‘ঘটনাটি দুঃখজনক, কিন্তু এই মূহুর্তে আমরা তল্লাশি ও উদ্ধারের ওপরই জোর দিচ্ছি। এই ঘটনার বিস্তারিত বের হওয়ার পর যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে জাপান।’
অন্যদিকে এক বিবৃতিতে মেরিন কোর জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোররাত ২টার দিকে জাপানের উপকূল থেকে প্রায় ৩২২ কিলোমিটার দূরে ঘটনাটি ঘটেছে। দুর্ঘটনার প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি মেরিন কোর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রিফুয়েলিং প্রশিক্ষণের সময় ঘটনাটি ঘটেছে।
ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দ্রুত তল্লাশি শুরু করার জন্য জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। বিমান দুইটি রুটিন মাফিক মহড়া চালাচ্ছিল বলেই জানানো হয়েছে। কিন্তু কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তার হদিশ এখনও মেলেনি।
এর আগে, গত জুন মাসেও জাপানের উপকূলে ভেঙে পড়ে মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-১৫। তবে ওই ঘটনার পর অবশ্য মার্কিন পাইলটকে উদ্ধার করে জাপানি নিরাপত্তাবাহিনী। নাহার ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে এই ঘটনা ঘটে।
জাপানে অবস্থিত সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটির নাম কাদেনা। এই সামরিক ঘাঁটিতে অন্তত ৪৭ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। এই ধরনের একাধিক দুর্ঘটনা বারবার ঘটেছে জাপানে। এমনকি গত জানুয়ারিতে জাপানের কাছে ক্ষমাও চান মার্কিন ডিফেন্স সেক্রেটারি জিম ম্যাটিস।