রাজধানীর বাংলামোটরে একটি বাড়িতে শিশু ছেলের লাশ নিয়ে এক বাবা বসে আছেন বলে জানিয়েছে র্যাব ও পুলিশ। ওই ব্যক্তির ভাই অভিযোগ করেছেন ছেলেটিকে হত্যা করেছেন তার বাবা। এ সময় ওই ব্যক্তির হাতে রামদা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ভাই।
বাংলামোটরের লিংক রোডের খোদেজা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উল্টো দিকের ১৬ নম্বর বাড়িটিতে আজ বুধবার সকালে এক বাবা তার দুই শিশুসন্তানকে ‘জিম্মি’ করে রেখেছেন—এমন সংবাদে বাসাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। কিছুক্ষণ পরে র্যাব, পুলিশ, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যেরা বাড়িটি ঘিরে ফেলেন। পুলিশ ও র্যাব ভেতরে ঢুকে ওই শিশুর লাশ দেখতে পেয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে।
শিশুটির নাম নূর সাফায়েত। তার বয়স আনুমানিক আড়াই বছর।
র্যাব-২–এর এসআই শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকেছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি শিশুটির বাবা বসে আছেন, তার পাশে একজন হুজুর বসে আছেন। শিশুটিকে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো একটি টেবিলের ওপর রাখা হয়েছে। শিশুটির বাবাকে কোনো সাহায্য লাগবে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কারো সাহায্য লাগবে না। আপনারা কেন এসেছেন? আপনারা চলে যান। বেলা একটার দিকে আমি নিজে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে আমার ছেলেকে দাফন করব।’”
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘ওই বাসায় একটি শিশু মারা গেছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। শিশুটির বয়স আড়াই থেকে তিন বছর।’
তিনি জানান, শিশুর বাবা এর আগে মাদক গ্রহণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। জেলেও পাঠানো হয়।
শিশুটির বাবার নাম নুরুজ্জামান কাজল। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ওই বাসার দোতলায় থাকতেন কাজল। পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মাস খানেক আগে তার স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।
ঘটনা শুনে নুরুজ্জামান কাজলের ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বল ঘটনাস্থলে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কাজল বাসা থেকে বের হয়ে পাশে থাকা মাদরাসায় গিয়ে জানান, তার ছোট ছেলে নূর সাফায়েত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। এটা যেন মাইকে ঘোষণা করা হয়। তারপর মাদরাসার ছাত্রদের পবিত্র কোরআন খতম দেয়ার জন্য নিয়ে যেতে চান। এ কথা শোনার পর আবদুল গাফফার নামে একজন খাদেম মাদরাসা থেকে তার সাথে যান। এখনো তিনি ভেতরে আটকা আছেন। মাইকে সংবাদ শুনে আমি আসি। ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করি। কিন্তু কাজল ঢুকতে দেননি। দরজা আটকে দিয়েছেন। কাজলের সঙ্গে তার বড় ছেলে সুরায়েত (৪) আছে।’
নুরুল হুদা উজ্জ্বল অভিযোগ করেন, তার ভাই নুরুজ্জামান কাজল দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলেকে হত্যা করেছেন। তার হাতে রামদা ছিল।