জামালপুরে নতুন করে এক শিশুসহ তিনজনকে করোনা আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে ইসলামপুর উপজেলার মাদরাসাছাত্র এক শিশুও রয়েছে। বাকি দুজন হলেন মাদারগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার একজন গাড়িচালক।
গতকাল সোমবার (১৩ এপ্রিল) তাদের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে করোনা পজিটিভ আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত মোট ১১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আক্রান্ত এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি ইউনিয়নের জোয়ার্দারপাড়া গ্রামে করোনা আক্রান্ত শিশুটির বয়স ১০ বছর। সে ইসলামপুরের গাইবান্ধা ইউনিয়নের চর দাদনা গ্রামের একটি হাফিজিয়া মাদরাসার ছাত্র। মাদরাসা বন্ধ থাকায় সে বাড়িতে অবস্থান করছিল।
গত শনিবার পেটের ব্যথার অসুখ নিয়ে বাড়ির কাছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায় শিশুটি। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পেটের ব্যথার ওষুধ লিখে দেওয়ার পাশাপাশি করোনা সন্দেহে তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহে পাঠান।
গতকাল সোমবার শিশুটির নমুনায় করোনা পজিটিভ এসেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এ এম আবু তাহের বলেন, শিশুটির বাড়িসহ জোয়ার্দারপাড়ার ৫০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। শিশুটিকে জামালপুরে পাঠানো হয়েছে।
একই দিন করোনা শনাক্ত হওয়া মাদারগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের উপ-সহকারী কমিউিনিটি মেডিক্যাল অফিসারের (সাকমো) বয়স ৩৪ বছর। তাঁর বাড়ি জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের ডোয়াইল পূর্বপাড়া গ্রামে। গত রবিবার সন্ধ্যায় তিনি কর্মস্থল মাদারগঞ্জ হাসপাতাল থেকে সরিষাবাড়ীর গ্রামের বাড়িতে যান।
সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমদ জানান, ডোয়াইল পূর্বপাড়ায় তাঁর বাড়িসহ আশপাশের দশটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তাঁকে জামালপুরে পাঠানো হয়েছে। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসানের পক্ষ থেকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য খাদ্য সহায়তা বাবদ পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
করোনা আক্রান্ত একই হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়িচালকের বয়স ৩৭ বছর। তিনি হাসপাতালের একটি পরিত্যক্ত বাসায় থেকে চাকরি করেন। তাঁর বাড়ি শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায়। এর আগে একই হাসপাতালের একজন ফার্মাসিস্টের করোনা শনাক্ত হওয়ার পর নতুন আক্রান্ত এই দুজন হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।
মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের গাড়িচালককে রাতেই জামালপুরে পাঠানো হয়েছে।
জামালপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কে এম শফিকুজ্জামান বলেন, নতুন করোনা আক্রান্ত তিনজনকে সোমবার রাতেই জামালপুর সদর হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। নতুন এই তিনজনসহ জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১১ জনে। তাঁদের মধ্যে মৃত এক নারীর নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়।