কমানো হচ্ছে ক্লাস ও পরীক্ষা, সিলেবাসেও কাটছাঁট

দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ঝিমিয়ে পড়া শিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে বেশ কিছু বিকল্প ভাবছে সরকার। এর মধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগের পাশাপাশি প্রথম ধাপেই ক্লাস ও পরীক্ষা কমিয়ে আনার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। একই সাথে বার্ষিক সিলেবাসের মধ্যে পরিবর্তন এনে কাটছাঁটের কথাও ভাবা হচ্ছে।

এ দিকে করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় মাস ধরেই বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যদিও মার্চ থেকে এপ্রিল এই দুই মাস শিক্ষার্থীদের তাদের পাঠ্যধারা এগিয়ে নেয়ার কথা। শিক্ষাবর্ষের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই দুই মাসে নতুন এবং পুনঃভর্তি ছাড়াও বই পুস্তক কেনা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজে চলে যায়। এর পরই শুরু হয় মূল পাঠধারা। কিন্তু এ বছর ঠিক সেই সময়টাতেই বড় একটি গ্যাপ সৃষ্টি হয়েছে পড়াশোনায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে আবার কবে ক্লাসে ফিরবে শিক্ষার্থীরা সেটা এখনো অনিশ্চিত।

এ অবস্থায় চলতি শিক্ষাবছরের অর্ধেক সময় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে ক্লাস ও পরীক্ষা কমিয়ে আনারও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: ফসিউল্লাহ জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে টানা এক মাস বন্ধ থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। এ পরীক্ষা আগামী ১৫ থেকে ২৪ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল। যদিও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা টেলিভিশনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেছি। যারা টেলিভিশনে ক্লাস করতে পারছে না তারা ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে সেসব ক্লাস করতে পারছে। আমাদের কিছু প্রতিকূলতা থাকার পরও কিছু শিক্ষার্থী এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকছে। তাদের কথা চিন্তা করে বিদ্যালয় খুললে সেসব ক্লাস সংক্ষিপ্ত আকারে শিক্ষকরা রিভিশন দেবেন। তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে এলে বন্ধের দিনগুলোতে পরীক্ষা-ক্লাস নিয়ে সমন্বয় করা হবে। আর যদি তা না হয় তবে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করতে হবে। ক্লাস-পরীক্ষা কমিয়ে ২০২০ শিক্ষাবর্ষ শেষ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

অন্য দিকে আগামী এক মাসের মধ্যে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পাঠদান কার্যক্রম ছয় মাস পিছিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। আর এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সিলেবাসের ক্লাস-পরীক্ষা কমিয়ে শিক্ষাবর্ষ শেষ করতে একটি নতুন পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সিলেবাস কাটছাঁট এবং পরীক্ষা কমিয়ে আনার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো: গোলাম ফারুক জানান, সাধারণ ছুটির মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সিলেবাস পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না। তবে এটি আরো দীর্ঘায়িত হলে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কিছু ক্লাস-পরীক্ষা কমিয়ে আনা হতে পারে।

Share this post

scroll to top