প্রধানমন্ত্রী বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার না করার যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। প্রতিদিন পাইকারি হারে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেই গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে। শনিবার (০১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে যেসব আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে, তা তুলে ধরতে হবে গণমাধ্যমকে।
গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা আরো বলেন, জনগণ হলো ক্ষমতার মালিক, ১৬ কোটি মানুষের কাছে এ তথ্য তুলে ধরুন। তাহলে জনগণ যে রাষ্ট্রের মালিক, তা অনুধাবন করতে পারবে। জনগণ সক্রিয়ভাবে দেশ পরিচালনা করবে।
যোগ্য ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় দেখেছি, জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে সব কিছুই সম্ভব। নির্বাচনের সময় ফটো বা ভিডিও করা যাবে না বলে নির্বাচন কমিশন আইন করেছে, সেটা বাতিল করা না হলে আদালতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধানে যে সাম্যের রাজনীতির কথা বলা হয়েছে, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে। সংবিধানেই লেখা আছে সেই রাজনীতির কথা। এখানে নতুন ধারার কোনো রাজনীতি চালুর দরকার নেই। সংবিধান মেনে রাষ্ট্র পরিচালনা করলেই প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করা যাবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০৭ সালে শেখ হাসিনা জোরালোভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতায় এসে তিনি তা বাতিল করে দিলেন। আদালতের রায়েও বলা আছে, আরো দুই বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যেতে পারে।
জনগণের আস্থা পেয়ে সরকারে গেলে সংবিধান অনুযায়ী সবকিছু পরিচালিত করা হবে বলেও জানান প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন বেগবান করার জন্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু প্রতিদিন প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গ্রেফতারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা যেন বাস্তবায়ন করা হয়। তা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু ও অর্থনীতিবিদ রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।