রাসূল সা: যেমন আমাদেরকে আখিরাতে মুক্তির পথ ও পদ্ধতি দেখিয়েছেন, তেমন বিভিন্ন রকম রোগবালাই ও অসুস্থতা থেকে নিরাপদ থাকার বহু পথ বাতলে দিয়েছেন। তিনি অনেক চিকিৎসার কথা আমাদের বলে গেছেন। আর আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা: প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তিনি নিজে থেকে কিছুই বলেন না। যা বলেন তা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত ওহির ভিত্তিতেই বলে থাকেন।’ যার কারণে তিনি যত চিকিৎসার কথা বলেছেন, সেগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা; সেটি প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ হোক।
আমাদের এ জীবনে যে কোনো অসুখ থেকে বাঁচার আপাত দৃষ্টিতে সব উপায় যদি বন্ধ হয়ে যায়, সব পথ যদি রুদ্ধ হয়ে যায়; তবুও একজন মুমিন হিসেবে রাসূলুল্লাহর সা: বাতানো সব এবং সর্ব রোগের চিকিৎসা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ও শেষ অবলম্বন হিসেবে ঠিকই থেকে যায়। আজ আমরা তেমন পাঁচটি চিকিৎসার কথা বলব যেগুলোতে আল্লাহ তায়ালা সব রোগবালাই থেকে আমাদের সুস্থ ও নিরাপদ থাকার উপাদান নিহিত রেখেছেন।
১. কালো জিরা : এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, কালো জিরার মধ্যে আল্লাহ তায়ালা মৃত্যু ছাড়া পৃথিবীর অন্য সব রোগের প্রতিষেধক বা ওষুধ রেখেছেন। অর্থাৎ কেউ যদি কালো জিরাকে গ্রহণ করেন; সেটি সরাসরি খাওয়া হতে পারে আবার তেল বানিয়ে পান করা হতে পারে অথবা ভর্তা করে খাওয়া হতে পারে। আল্লাহ তাকে সব রোগ থেকে আরোগ্য লাভের তাওফিক দান করবেন। সুতরাং আমাদের উচিত নিয়মিত কালো জিরা খাওয়া বা তেল বানিয়ে পান করা।
২ .মধু : সূরা নাহলের ৬৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, এর মধ্যে মানুষের জন্য শেফা রয়েছে। অর্থাৎ মানুষের জন্য আরোগ্য লাভের উপাদান মধুতে রয়েছে। নবী সা: নিজেও মধু পছন্দ করতেন। বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিসে এসেছে, আরোগ্য লাভের দু’টি পন্থা তোমরা অবলম্বন করবে। তার একটি হলো মধু পান করা আর অন্যটি হলো কুরআনে কারিমের তিলাওয়াত। যার কারণে কুরআনে কারিম তিলাওয়াত করা বা পড়ে ঝাড়ফুঁক করা যেমন চিকিৎসার কাজ দেয়, তেমনি মধুও মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেছেন, ‘মধুতে শেফা আছে’ কিন্তু কোনো রোগের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তার মানে সব রোগের জন্যই মধু উপকারী।
৩. হেজামা বা সিঙ্গা লাগানো : রাসূল সা: নিজেও সিঙ্গা লাগিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, যদি কেউ বিশেষ কিছু সময়ে সিঙ্গা গ্রহণ করে তা হলে আল্লাহ তাকে সব রোগ থেকে আরোগ্য দেবেন।
৪. জমজমের পানি পান করা : সহিহ মুসলিমে এসেছে, ‘জমজমের পানি রোগের জন্য ওষুধ।’ এখানে রাসূলুল্লাহ সা: সাধারণভাবে রোগ বলেছেন অর্থাৎ সব রোগের ওষুধ হিসেবে বলেছেন। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘জমজমের পানি যে রোগের জন্য পান করা হবে সেই রোগ থেকেই আরোগ্য দেবে। এ হাদিসের সনদ নিয়ে কোনো কোনো মুহাদ্দিস কথা বললেও এটি হাসান বা গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের হাদিস।
৫. আজওয়া খেজুর : এটি এক ধরনের বিশেষ খেজুর। এর দাম সাধারণ খেজুর থেকে একটু বেশি। সহিহ বুখারিতে এসেছে, ‘যদি কেউ প্রতিদিন সকালে সাতটি করে আজওয়া খেজুর খায়, তা হলে ওই দিনে মৃত্যু ছাড়া অন্য কোনো রোগ তার কোনো ক্ষতি করতে পারে না। সুতরাং এটিও সব রোগের ওষুধ।
উপরে বর্ণিত পাঁচটির মধ্যেই সব রোগে আরোগ্য রয়েছে। যেকোনো রোগ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য আল্লাহ ওপর ভরসা করে আমাদের এই চিকিৎসা উপায়গুলো অবলম্বন করলে আল্লাহ আমাদের আরোগ্য দিতে পারেন।