চলমান করোনা পরিস্থিতিতে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠান নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে এই পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও তা কবে নাগাদ শুরু হবে তা নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারছেন না। এ অবস্থায় টেনশনে পড়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা। যদিও শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ১৫ দিন আগেই শিডিউল প্রকাশ করা হবে। তবে সময় এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা গ্রহণের নির্দিষ্ট কোনো তারিখের প্রতিও আস্থা রাখতে পারছেন না কেউই।
এ দিকে দুই দফায় বাড়ানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। আরেক দফা বাড়ানোর কথা শোনা যাচ্ছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়ে স্কুল কলেজ রোজার ঈদের পর খোলার সিদ্ধান্ত হতে পারে বলেও গুঞ্জন আছে। এ অবস্থায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে সেটিও নিশ্চিত নয়।
যদিও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষার নতুন রুটিন প্রকাশ করার কথা প্রথমে বলা হয়েছিল, এখন করোনা পরিস্থিতির কারণে সেটিও করা হচ্ছে না। এ দিকে এপ্রিলের শেষভাগে শুরু হবে রোজা। তাই রোজার মধ্যে পরীক্ষা নেয়াটাও সহজ হবে না। ফলে রোজা এবং ঈদের পরে ছাড়া এই পরীক্ষা নেয়ার কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই।
এ দিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এপ্রিলের শুরু থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও করোনার কারণে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল থেকে শুরু হতে পারে রমজান মাস। রমজানে পরীক্ষা নেয়া কতুটুকু যুক্তিসঙ্গত তা ভেবে দেখার বিষয়। ফলে এই পরীক্ষা কবে নাগাদ শুরু হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। অন্য দিকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশও পিছিয়ে যাচ্ছে করোনার কারণে। এইচএসসি পরীক্ষার ফলের ওপর নির্ভর করেই দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলবে। চার-পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরীক্ষা গুচ্ছভিত্তিক হওয়ার কথা রয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রমও পিছিয়ে যাবে। একই সাথে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নেয়ারও সুযোগ পাবে না শিক্ষার্থীরা। সবমিলে নানা চিন্তা ভর করছে এসব শিক্ষার্থীর মনে।
অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে বারবারই বলা হচ্ছে, তাদের আপাতত টিভি ও সোস্যাল মিডিয়ার খবর দেখার প্রয়োজন নেই। অভিভাবকদের উচিত তার সন্তানকে এ ধপ্রণর খবর না শুনতে ও পড়তে দেয়া। এতে শিক্ষার্থীদের মনে হতাশা ভর করে। ভয়ভীতি সৃষ্টি হয়। তাই এ বিষয়টি অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের উচিত পরীক্ষার জন্য প্রতিদিন বইগুলো রিভিশন দেয়া। আগামী ১৫ দিন পর পরীক্ষা শুরু হবে এ ভাবনা নিয়ে পড়াশোনা করলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু: জিয়াউল হক জানান, পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে এখনি কিছু বলা যাচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির ওপর সব কিছু নির্ভর করছে। তিনি জানান, পরীক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। হাতে ১৪ থেকে ১৫ দিন সময় রেখে নতুন রুটিন তৈরি করা হবে।