করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশ জুড়ে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। তাই তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকদের ছুটি শেষ হচ্ছে শনিবার। কারখানা খুলবে রোববার। ফলে করোনার ঝুঁকি নিয়েই গত দুদিন যাবত ঢাকায় ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন পোশাক শ্রমিকরা। আর এতে করে কমিউনিটি সংক্রমণের বিস্তার ঘটার আশঙ্কা বহুগুন।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে ছুটি শুরু হলে ঢাকার বিভিন্ন কলকারখানার শ্রমিকরা বাড়ি ফেরে ২৬/২৭ অথবা ২৮ তারিখ। ফলে অনেকেই ওই দিনগুলোতে নিরাপদ দুরত্বে থাকার নিয়ম না মেনেই বিভিন্ন গণপরিবহনের মাধ্যমে কঠিন যুদ্ধের মাধ্যমে নিজ বাড়ি ফেরে। তাদের মধ্যে কেউ করোনার উপসর্গ নিয়ে নিজ এলাকায় এসেছেন কিনা বা ঢাকায় থাকা অবস্থায় কোন করোনা আক্রান্তের পাশে ছিলেন কিনা তা কিন্তু কেউই সুনির্দিষ্ট করে বলেতে পারবেনা। ঢাকার শ্রমিকরা নিজ এলাকায় এসে পরিবার-পরিজন ও প্রতিবেশীর সাথে মেলামেশা করেছে নি:সন্দেহে। যেকারণে তাদের সংষ্পর্শে যারা এসেছিলেন তারাও কিন্তু ঝুঁকির মধ্যে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সুতরাং ২৬,২৭,২৮ বা তার পর যারা গ্রামাঞ্ছলে এসেছেন তাদের মাধ্যমে যদি কমিউনিটি বিষ্ফোরণ ঘটে তবে তা প্রকাশ পেতে আরো ৫/৬ দিন সময় লাগতেও পারে। আবার গ্রামাঞ্ছলে যারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন বা হয়েছেন বা উপসর্গ আছে এমন রোগী বা লক্ষণীয় ব্যক্তির সংষ্পর্শ থেকে যারা ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছেড়েছেন তারাও কিন্তু গোটা বাংলাদেশকে সংক্রমিত করার জন্য দায়ী হতে পারেন। কারণ, তারা গার্মেন্টেসে কাজ শুরু করার পর সেখানকার প্রতিষ্ঠান বা কমিউনিটিও কিন্তু সংক্রমিত হতে পারে। গার্মেন্টসে যেহেতু নিরাপদ দুরুত্বে থাকা সম্ভবনা নাই সেহেতু পুরো গার্মেন্টস খাতই করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। আবার এখন যদি আবার গার্মেন্টস কর্মীরা নিজ বাড়ি ফিরেন তাও মহা সমস্যার সৃষ্টি হবে। তাই করোনাভাইরাসের কমিউনিটি বিস্ফোরণ যাতে না ঘটে সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একটু করোনা রোধে সমস্ত গার্মেন্টস বন্ধ রাখাই যুক্তিযুক্ত ছিলো।
লেখক : মো. আব্দুল কাইয়ুম, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী
ইমেইল : kaium.hrd@gmail.com