ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ২৬ মার্চ হতে এ পর্যন্ত সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৪ জন মারা গিয়েছেন। তাদের মৃত্যুতে সর্বসাধারণের মাঝে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে তারা কেউ করোনায় আক্রান্ত নন বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হুদা খান জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কবীর ভুলসোমা গ্রামের নেওয়াজ আলীর কন্যা নাজমা (২৫), ২৭ মার্চ তার চাচা আব্দুর রাজ্জাক (৬০), ৩১ মার্চ ঈশ্বরগঞ্জে গোল্লা জয়পুর গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে জেলার কেন্দুয়া উপজেলার জল্লি গ্রামের হোসেন আলী (২০) ও মধুপুর বাজারের আব্দুল বারেক (৬০) সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত ব্যক্তিদের কোন পরীক্ষা ছাড়াই দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হুদা খান জানান, মাঠ পর্যায়ে মেডিক্যাল টিম তথ্যানুসন্ধান করে জানতে পারেন মৃত ব্যক্তিরা সর্দি-জ্বর ছাড়াও বিভিন্ন উপসর্গে ভুগছিলেন। মৃত ব্যক্তিদের পারিবারিক বর্ণনামতে তারা কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না।
এদিকে মৃত হোসেন আলীর বোন ইতি বেগম (২০) সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর গত বুধবার ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা ভাইরাসের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হুদা খান।
এদিকে কাকনহাটি গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র সুমন মিয়া (৩০) সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে এলাকায় সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, সুমন শ্বাসকষ্ট ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। করোনার সাথে তার মৃত্যুর কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতালের করোনা কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, ৪ জনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় যে করোনা গুজব ছড়িয়েছে তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সরকারি নির্দেশনা মেনে চললে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার চরহোসেনপুর গ্রামে শিমুল তলায় জিয়াউর রহমান (৩৫) নামে এক করোনা রোগী এসেছে বলে শহরে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। হাসপাতালের পরীক্ষার রিপোর্টে তার দেহে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে ডা. নুরুল হুদা খান জানান।